রবিবার, ৫ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

একটি মুরগি রক্ষায় ৩০০ লোককে দাওয়াত

নাটোর প্রতিনিধি

গুরুদাসপুর পৌর শহরের আনন্দনগর মহল্লায় একটি মুরগির দাবি নিয়ে দুই প্রতিবেশী নারীর বিবাদ গড়িয়েছে গ্রাম্য সালিশ পর্যন্ত। সালিশে মুরগিটি কাউকে না দিয়ে একটি মাদরাসায় এতিমদের খাবার হিসেবে দান করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। এ সিদ্ধান্ত একজন মানলেও অন্যজন মানতে নারাজ। এরপর স্বামী তার স্ত্রীকে সালিশের রায় মানাতে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যার হুমকি দিয়ে শেষমেশ আত্মগোপনে চলে যান। এদিকে স্ত্রী স্বামীকে জীবিত ফেরত পেতে মানত করে বসলেন একজোড়া খাসি। খাসির মাংস দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে ৩০০ লোককে খাওয়ানোর আয়োজন করা হলো। এটি কোনো গল্প নয়। ঘটে যাওয়া একটি সত্য ঘটনা। জানা গেছে, পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আনন্দনগর মহল্লার নুরুল ইসলাম নুরু ও প্রতিবেশী রবিউল করিম রবির স্ত্রীদের মধ্যে একটা মুরগির দাবি নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এ দ্বন্দ্ব সালিশ পর্যন্ত গড়ালে স্থানীয় মাতবররা মুরগিটি একটি মাদরাসায় দান করতে সিদ্ধান্ত দেন। সিদ্ধান্তটি রবিউল করিমের স্ত্রী মানলেও মানেননি নুরুল ইসলামের স্ত্রী। মুরগি দান না করার সিদ্ধান্ত নিলে স্ত্রীর ওপর অভিমান করে বাড়ি ছেড়ে চলে যান নুরুল ইসলাম। তাঁকে ফিরে পেতে স্ত্রী মানত করেন জোড়া খাসি জবাই দিয়ে গ্রামবাসীকে খাওয়ানোর। শুক্রবার নুরুল ইসলামের বাড়িতে চলে খাসি জবাই, মাংস প্রস্তুত, রান্নার আয়োজন। জুমার নামাজ শেষে অতিথিদের আপ্যায়ন করানো হয়। নুরুল ইসলাম নুরুর ছেলে শেখ ফরিদ বলেন, ‘মুরগি নিয়ে দ্বন্দ্বে বাবা আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে বাড়ি ছেড়ে যান। বাবাকে জীবিত ফেরত পেতে মা খাসি মানত করেন। সে মানতের খাসির মাংশ দিয়ে অতিথিদের খাওয়ানো হয়েছে। ৩০০ জন মানুষ সে মাংস দিয়ে খিচুড়ি খেয়েছেন।’ প্রতিবেশী ইউনুছ আলী মোল্লা জানান, নুরুলের বাড়িতে অতিথি আপ্যায়নের পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় তাঁর বাড়িতেই চলছে এ আয়োজন।

১২ হাজার টাকা মূল্যের খাসি ও ৬০ কেজি চাল দিয়ে খিচুড়ি রান্না করা হয়েছে। প্রায় ২০ হাজার টাকা ব্যয়ে ৩০০ লোক দাওয়াত করে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফজলুর রহমান ফজল ও সাবেক কাউন্সিলর মোশারফ হোসেন বাবলু জানান, তাঁরা বিষয়টি শুনেছেন কিন্তু দাওয়াত পাননি। তবে ঘটনাটি এলাকায় বেশ আলোচিত হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর