মঙ্গলবার, ৭ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

বাড়ছে তিস্তা ধরলার পানি চরাঞ্চলে সতর্কতা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর ও লালমনিরহাট প্রতিনিধি

বাড়ছে তিস্তা ধরলার পানি চরাঞ্চলে সতর্কতা

উজান থেকে আসা ঢলে উত্তর অঞ্চলে তিস্তা, ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি হু হু করে বাড়ছে। গত কয়েকদিনে লালমনিরহাটের ডালিয়া ও কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁঁই করছে। নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির কারণে নিম্নাঞ্চলে বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যেই পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) থেকে চরাঞ্চলবাসীকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। গত শুক্রবার বন্যার পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছিল শনিবার ও রবিবার ভারি বর্ষণ ও ভারত থেকে পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তা ও ধরলার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। নিচু এলাকায় দেখা দিতে পারে বন্যা। এমনকি বেড়িবাঁধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হতে পারে। তাই চরাঞ্চলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে গতকাল সকাল ৯টায় বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এখানে পানির বিপৎসীমার মাত্রা ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার। এরআগে ডালিয়া পয়েন্টে গত শনিবার শূন্য দশমিক ৮৩ সেন্টিমিটার এবং শুক্রবার শূন্য দশমিক ৯৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। অপরদিকে কাউনিয়া রেলওয়ে সেতু পয়েন্টে গত শুক্র ও শনিবার ১ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। হাতীবান্ধা  উপজেলার গড্ডিমারী ইউপি চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বলেন, আমার ইউনিয়নের ছয়টি মৌজা বন্যার ঝুঁঁকিতে রয়েছে। নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে ছয় মৌজার প্রায় সব বাড়ি প্লাবিত হবে। দেখা দেবে ভাঙন। আদিতমারীর মহিষখোচা ইউপি চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, কয়েকদিন ধরে উজানে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে নদী তীরবর্তী গ্রামগুলোতে বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, বন্যায় যাতে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সে জন্য সরকারিভাবে সব ধরনের আগাম প্রস্তুতি নেওয়া আছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র। বন্যা মোকাবিলায় জনবল, শুকনো খাবার, চাল, নগদ টাকা সবই মজুদ আছে। এদিকে রংপুরের তিস্তা, ধরলা, ব্রহ্মপুত্রের পানি বেড়েছে। তিস্তায় ডালিয়া পয়েন্টে পানি কিছুটা কম থাকলেও কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। রংপুর পাউবো ও বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে গত রবিবার ভোরে পানির প্রবাহ ছিল ৫১ দশমিক ৯০ সেন্টিমিটার। সোমবার ভোরে পানি কিছুটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১ দশমিক ৯৫ সেন্টিমিটারে। অপরদিকে কাউনিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে। সোমবার ভোরে এ পয়েন্টে পানির প্রবাহ ছিল ২৯ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার। এর আগের দিন ওই পয়েন্টে পানি প্রবাহিত হয়েছে ২৯ দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার। এ পয়েন্টে বিপৎসীমা ২৯ দশমিক ২০ সেন্টিমিটার। রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব বলেন,  আগামী ৪৮ ঘণ্টা ভারি বৃষ্টি হলে তিস্তা ও ধরলার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

সর্বশেষ খবর