শনিবার, ১৮ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা
সংক্ষিপ্ত

বাংলাবান্ধায় ডিজিটাল স্কেলে কারসাজি, কার্যক্রম বন্ধ

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

দেশের একমাত্র চতুর্দেশীয় স্থলবন্দর বাংলাবান্ধায় ডিজিটাল স্কেলে অভিনব কায়দায় ওজন কম-বেশি করার অভিযোগ উঠেছে। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা হাতেনাতে ধরার পর দুই কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে পোর্ট কর্তৃপক্ষ। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন থেকে একটি চক্র অর্থের বিনিময়ে স্কেলে পণ্য ও পরিবহনের মাপে হেরফের করছেন। এতে অনেক ব্যবসায়ী এবং সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের পথে বসার উপক্রম হয়েছে। রেমিট্যান্স হারানোর পাশাপাশি রাজস্ব খাতেও ক্ষতি হয়েছে। বিষয়টি সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ব্যবসায়ী ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা বন্দরের সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা দিয়েছেন।

বাংলাবন্দর স্থলবন্দরে রয়েছে দুটি ডিজিটাল ওজন স্কেল। ভারত, নেপাল, ভুটান এবং বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানিযোগ্য মালামাল এবং পরিবহনের ওজন এই দুই স্কেলেই করা হয়। ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রতিদিন পাঁচ শতাধিক ট্রাকের হাজার হাজার টন মালামাল পরিমাপ করেন নির্ধারিত কর্মচারীরা। অভিযোগ রয়েছে, উৎকোচের বিনিময়ে ওজন স্কেলে পরিমাপ কম-বেশি করেন অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ ঘটনায় গত ১৩ জুন হাতেনাতে ধরা পড়েন দুই কর্মচারী। ব্যবসায়ী এবং সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা বলছেন, বন্দরে দীর্ঘদিন ধরেই এই ডিজিটাল কারচুপি চলছে। তারা জানান, আমদানি করা কোনো কোনো ট্রাকের মাল ওজন স্কেলে পরিমাপে কম হয়। কম পাওয়া মালের পরিমাণ পরিবহনের ওজন বাড়িয়ে সমান করে দেওয়া হয়। এই মাল যখন আমাদানিকারকের নিজস্ব স্কেলে পরিমাপ করা হয় তখন কয়েক টন কমে যায়। কিন্তু এলসির মাধ্যমে পুরো মালের টাকা আগেই রপ্তানিকারকের অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়। দীর্ঘদিন এমন ঘটনা ঘটলেও কেউই ধরতে পারছিলেন না। বিষয়টি ফাঁস হয় ভারত থেকে আসা এক ট্রাকচালকের মাধ্যমে। আবদুল মোতালেব নামে ওই চালক জানান, তার ট্রাকে মাল কম হয়েছিল। ওজন স্কেলের দায়িত্বে থাকা একজন যান্ত্রিকভাবে তা ঠিক করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এজন্য তিনি ৩০০ টাকা দাবি করেন। পরে তাকে ১০০ টাকা দিতে হয়েছে। ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর ওই ট্রাক নিজস্ব স্কেলে পরিমাপ করা হলে প্রায় ১ টন ভুট্টা কম হয়। পরে আমদানিকারক এবং সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা কর্তৃপক্ষকে জানালে স্কেল অপারেটর আরিফুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। আমদানিকারক শামীম হোসেন বলেন, অনেক আশা করে অল্প পুঁজি নিয়ে আমদানি শুরু করেছিলাম। প্রায়ই আমার আমদানি করা মালামাল ওজনে কম হতো। আমি বুঝতে পারিনি। আমি পথে বসে গেছি। এখন বুঝছি এটা ডিজিটাল স্কেলের কারসাজি। এর সঙ্গে বন্দরের অনেকেই জড়িত। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েসনের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পরিমাপে কম হওয়া মালামালের জন্যও নির্দিষ্ট পরিমাণ ডলার আগেই পাঠাতে হয়। ফলে রেমিট্যান্স বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। লোকসান গুনতে হয় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের। আমরা এর যথাযথ সমাধান চাই। বাংলাবান্ধা পোর্ট ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বলেন, জড়িতদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।

সর্বশেষ খবর