শুক্রবার, ২৪ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

আম রপ্তানির অপেক্ষায় নওগাঁর চাষিরা

নওগাঁ প্রতিনিধি

আম রপ্তানির অপেক্ষায় নওগাঁর চাষিরা

দেশের অন্যতম আম উৎপাদনকারী জেলা নওগাঁ। চলতি বছর জেলায় আম উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৬৮ হাজার মেট্রিক টন। উৎপাদনের তুলনায় রপ্তানির জন্য লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সামান্যই। কৃষি বিভাগ বলছে, এবার জেলায় ২ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে রপ্তানি উপযোগী আম চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ১২ দশমিক ৫ মেট্রিকটন হিসেবে নওগাঁ থেকে রপ্তানি করা যাবে ৩১ হাজার ৩৭৫ মেট্রিকটন।

জেলার আম চাষিরা বলছেন, রপ্তানি না বাড়ালে আমের কাক্সিক্ষত দাম পাবেন না তারা। ন্যায্যমূল্য না পেলে ভালো জাতের আম উৎপাদনে আগ্রহ ধরে রাখা কঠিন হবে। কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত এক দশকে সারা দেশের মধ্যে নওগাঁয় আম চাষের পরিসর বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। এই সময়ে প্রতি বছর জেলায় গড়ে দেড় হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ বেড়েছে। এ বছর নওগাঁয় ২৯ হাজার ৪৭৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১২ দশমিক ৫ মেট্রিকটন। সে হিসেবে জেলায় এ বছর ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৪৩৭ মেট্রিক টন আম উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে নওগাঁয়। যার মূল্য ১ হাজার ৮৪২ কোটি ১৭ লাখ টাকা। গত বছর উত্তম কৃষি পদ্ধতি (জিএপি) মেনে ১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে নিরাপদ আম চাষ হয়। এর মধ্যে হাতেগোনা কয়েকজন চাষি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মাত্র ১৮ মেট্রিকটন আম রপ্তানি করেছিলেন। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গেল বার আট মেট্রিকটন আম রপ্তানি করেন সাপাহার গোডাউন পাড়ার বরেন্দ্র অ্যাগ্রো ফার্মের মালিক সোহেল রানা। তিনি এবার ৫০ মেট্রিকটন আম রপ্তানির আশা করছেন। সাপাহার উপজেলার আরেক চাষি সাখাওয়াত হাবিব বলেন, আম রপ্তানির আশায় এ বছর প্রথম উত্তম কৃষি পদ্ধতি অনুসরণ করে ২ হাজার আম্রপলি ও ল্যাংড়া আম গাছে ফ্রুট ব্যাগিং করেছি। ইতোমধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার একটি বেসরকারি আম রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। সাখাওয়াত বলেন, আম রপ্তানি বাড়ানোর জন্য বেসরকারি পর্যায়ের বিনিয়োগকারীদের এগিয়ে আসা উচিত। বিনিয়োগকারীরা আম রপ্তানির আশ্বাস দিলে চাষিরা নিরাপদ আম উৎপাদনে উৎসাহ পাবেন। নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্যান) খিজির হোসেন প্রামাণিক বলেন, রপ্তানিযোগ্য আম দূষণমুক্ত করতে হয়। অনিরাপদ আম বিদেশ পাঠালে সেগুলো ফেরত আসার আশঙ্কা থাকে। আম দূষণমুক্ত করার সবচেয়ে আধুনিক পদ্ধতি হচ্ছে ভিএইচটি প্লান্ট। আবার আম বাছাইয়ের জন্য প্যাকিং হাউস ও সহজে সঙ্গনিরোধ (কোয়ারেন্টিন) সনদ দরকার। এগুলোর কোনোটিই এ জেলায় নেই। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) একেএম মনজুরে মাওলা বলেন, আশা করছি, আগামী অর্থ বছরে নওগাঁয় ভিএইচটি প্লান্ট স্থাপন কাজ শুরু হবে। এটি হলে জেলার আম রপ্তানির সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।

সর্বশেষ খবর