রবিবার, ২৪ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

ভারত থেকে ফের চাল আমদানি শুরু

হিলি প্রতিনিধি

দেশের বাজারে চালের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে চালের আমদানি শুল্ক কমানোয় ও বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির অনুমতি দেওয়ায় দীর্ঘ ১০ মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধের পর আবারও দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হয়েছে। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টায় ভারত থেকে আমদানিকৃত দুটি চালবাহী ট্রাক ভারত থেকে দেশে প্রবেশের মধ্য দিয়ে বন্দর দিয়ে আবারও চাল আমদানি শুরু হয়। দুটি ট্রাকে ৭৪ টন অসিদ্ধ আতব চাল আমদানি করা হয়েছে। নওগাঁর একে ট্রেডিং নামের এক আমদানিকারক এসব চল আমদানি করেছেন। আমদানিকারক মনোনীত সিএন্ডএফ এজেন্ট রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের নওগাঁর আমদানিকারক মেসার্স একে ট্রেডিং চাল আমদানির অনুমতি পাওয়ার পর চাল আমদানির জন্য এলসি খুলেছিলেন। আজ ভারত থেকে দুটি ট্রাকে ৭৪ টন অসিদ্ধ আতপ চাল দেশে প্রবেশ করেছে। প্রতিটন চাল ৩০০ মার্কিন ডলার মূল্যে আমদানি করা হয়েছে। প্রতি কেজি চালে কাস্টমসে সরকারের শুল্ক ও বন্দর খরচ মিলিয়ে ১০ টাকার মতো পড়বে। আজকেই এসব চাল খালাস করা হবে না আগামীকাল কাগজপত্র পেলে কাস্টমসে বিল অব এন্ট্রি সাবমিট করা হবে। এর পরে পরীক্ষণ শুল্কায়ন করে শুল্ক পরিশোধ সাপেক্ষে এসব চাল খালাস করে নেওয়া হবে। তবে চাল আমদানিতে পড়তা না থাকার কারণে বন্দর দিয়ে তেমন একটা চাল দেশে প্রবেশ করার সম্ভাবনা নেই বলে আমদানিকারকরা আমাদের জানিয়েছেন। হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, চাল আমদানিতে বাড়তি শুল্ক আরোপ থাকায় গত ৩১ আগষ্ট থেকে বন্দর দিয়ে চাল আমদানি বন্ধ ছিল।

 সম্প্রতি সরকার চালের আমদানি শুল্ক কমিয়ে নতুন করে চাল আমদানির অনুমতি দেওয়ার ফলে দীর্ঘ ১০ মাসের বেশি সময় পর আজ থেকে আবারও বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়েছে। এতে করে সরকারের রাজস্ব আয় যেমন বাড়বে তেমনি বন্দর কর্তৃপক্ষের দৈনন্দিন আয়ও বাড়বে। সেই সঙ্গে বন্দরে কর্মরত শ্রমিকদের আয়ও বাড়বে। কাস্টমসের সব প্রক্রিয়া শেষে আমদানিকারকগণ চাল যেন দ্রুত খালাস করে দেশের বাজারে ছাড়তে পারে এজন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে রেখেছে বলে জানান তিনি। হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা এসএম নুরুল আলম খান বলেন, চাল আমদানিতে ৬২.৫ ভাগ শুল্ক আরোপ থাকায় বন্দর দিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে নন বাসমতি রাইস আমদানি বন্ধ রয়েছে। তবে মাঝে মধ্যে বন্দর দিয়ে বাসমতি রাইস আমদানি হচ্ছিল। সম্প্রতি সরকার চালের আমদানি শুল্ক কমিয়ে রেয়াতি হারে চাল আমদানির সুযোগ দিয়েছেন এক্ষেত্রে চালের আমদানি শুল্ক ২৫ভাগ রয়েছে। তবে শুধুমাত্র যারা সরকারের নিকট থেকে চাল আমদানির অনুমতি পেয়েছেন তারাই শুধুমাত্র এই শুল্কে চাল আমদানি করতে পারবেন। আর অন্য কেউ চাল আমদানি করলে তাকে ৬২.৫ ভাগ শুল্ক পরিশোধ করতে হবে। প্রসঙ্গত, দেশীয় কৃষকের উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে গত বছরের ৩১ আগষ্ট চালের আমদানি শুল্ক বাড়িয়ে দেয় সরকার, এতে করে ওই সময় ভারত থেকে চাল আমদানি বন্ধ ছিল। সম্প্রতি দেশে চালের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠলে বাজার নিয়ন্ত্রণে চালের আমদানি শুল্ক ৬২.৫ ভাগ থেকে কমিয়ে ২৫ ভাগ নির্ধারণ করে দেয় সরকার। সেই সঙ্গে বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির জন্য গত ৩০ জুন প্রথম ধাপ ও পরবর্তীতে আরও কয়েক ধাপে সারা দেশের ৩৮০ জন আমদানিকারককে কয়েক লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দেয়। এর মধ্যে হিলি স্থলবন্দরের ১০ জন আমদানিকারক ৩০ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি পায়।

সর্বশেষ খবর