শুক্রবার, ২৯ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে স্বাস্থ্যসেবা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে স্বাস্থ্যসেবা

নাসিরনগরের ঝুঁকিপূর্ণ কমিউনিটি ক্লিনিক -বাংলাদেশ প্রতিদিন

সামনে সরকারি খাল ও টয়লেট। পেছনে বিশাল পুকুর। এর মাঝখানে একতলা ভবন। দেখলে মনে হবে পরিত্যক্ত স্থাপনা। এর পাশ দিয়ে মানুষ যেতেও ভয় পায়। ঝুঁকি জেনেও এ ভবনেই প্রতিদিন আসছেন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপিসহ) স্বাস্থ্য সহকারীরা। নিয়মিত দিচ্ছেন স্বাস্থ্যসেবাও। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের কয়েকটি কমিউনিটি ক্লিনিকের চিত্র এমনই। সম্প্রতি ধরমন্ডল ইউনিয়নের দৌলতপুর ও চাপরতলা ইউনিয়নের কালিউতা গ্রামের ক্লিনিকগুলোর দূরাবস্থার দৃশ্য চোখে পড়ে। ঝুঁকিপূর্ণ কয়েকটি কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যসেবা কোনোমতে সচল রাখা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হবেন এলাকার মানুষ। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ১৯৯৬-২০০০ অর্থবছরে নাসিরনগর উপজেলায় ২২টি কমিউনিটি ক্লিনিক ভবন নির্মাণ করা হয়। এক দশক না যেতেই নয়টি কমিউনিটি ক্লিনিক ভবন বেহাল হয়ে যায়। এর মধ্যে তিনটি পরিত্যক্ত অন্যগুলো ঝুঁকিপূর্ণ। পরিত্যক্ত ক্লিনিক তিনটি হচ্ছে, ধরমন্ডল ইউনিয়নের দৌলতপুর, চাপড়তলা ইউনিয়নের কালিউতা ও গোয়ালনগর ইউনিয়নের কদমতলী। ঝুঁকিপূর্ণ ক্লিনিক হচ্ছে- ভলাকুট ইউনিয়নের খাগালিয়া, গোকর্ণ ইউনিয়নের জেঠাগ্রাম ও নূরপুর, পূর্বভাগ ইউনিয়নের নরহা, হরিপুর ইউনিয়নের আলিয়ারা ও ধরমন্ডল ইউনিয়নের ধরমন্ডল। কদমতী, দৌলতপুর ও কালিউতা ক্লিনিক ভবনগুলোর দেওয়ালে ফাটল ধরেছে। পেছনের দেয়াল ভেঙে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। দরজা-জানালাও ভাঙা। ভবনের একপাশ ধসে গেছে। ছাদ থেকে পলেস্তেরা খসে পড়ছে। কয়েকবার মাথায় পলেস্তেরা পড়ে আহত হয়েছেন রোগীসহ সিএইচসিপিরা। ভিতরে ময়লার স্তূপ। নেই বিদ্যুৎ, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা। সিএইচসিপিরা ভাড়া ঘরে সেবা দেওয়ার কথা বললেও কর্তৃপক্ষ রাজি হচ্ছে না। দৌলতপুর ক্লিনিকের সিএইচসিপি তাহমিনা আক্তার বলেন, তিন-চার বছর ধরে ক্লিনিকের পেছনের অংশের মাটি সরে গিয়ে ভবনটির এখন করুণ দশা। যে কোনো সময় পুরো ভবন ভেঙে প্রাণহানি হতে পারে। ইচ্ছা না থাকলেও চাকরির জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। কালিউতা ক্লিনিকের সিএইচসিপি শামছুন্নাহার বলেন, আমার এলাকার ক্লিনিকের ভবনের একপাশ ভেঙে গেছে। দুই বছর ধরে ভবনটিতে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছি। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অভিজিৎ রায় বলেন, যেসব কমিউনিটি ক্লিনিক ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত সেগুলো নতুনভাবে নির্মাণ করার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর