রবিবার, ৩১ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

ভিজিএফের চাল বিতরণে অনিয়ম

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নে ভিজিএফ ও ভিজিডির চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এমনকি মৃত ব্যক্তির নামে ভিজিএফের চাল তুলে আত্মসাতের তথ্য পাওয়া গেছে। অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করেছেন নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া নাগেশ্বরী উপজেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, ভিজিএফ ও ভিজিডির মাল আত্মসাৎসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ ভিতরবন্দ ইউপি চেয়ারম্যান শফিউল আলম শফির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন ইউপি সদস্যরা। অনাস্থা প্রস্তাবের তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। সরকারি সহায়তা বঞ্চিত মুক্তিযোদ্ধাসহ ১৪০ জনের লিখিত অভিযোগের তদন্ত চলছে। এরপর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। চেয়ারম্যান শফিউল আলম শফি তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

তিনি বলেন, আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। সবকিছু নিয়ম মাফিক করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগে জানা যায়, গত ঈদের সময় তালিকাভুক্ত দুই সহস্রাধিক দুস্থ মানুষকে ভিজিএফের চাল না দিয়ে আত্মসাৎ করেন চেয়ারম্যান। মৃত ব্যক্তির নামে ভিজিএফের চাল বরাদ্দ, একই ব্যক্তির নামে এবং একই পরিবারে একাধিক কার্ড প্রদান।

 অবস্থাসম্পন্ন ব্যক্তির নামে ভিজিএফের মাল বরাদ্দ, ট্যাক্সের টাকা আত্মসাৎ ও বিধি বহির্ভূতভাবে হাট ইজারা দিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান। মোসলেমা বেওয়া (ভিজিএফ কার্ড নং ১৯২) জানান, গত পাঁচ মাস ধরে তিনি ভিজিডির চাল পাচ্ছেন না। ইউপি চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণে সরকারি সুবিধাবঞ্চিত হচ্ছেন তিনি। ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আনিছুর রহমান জানান, ট্যাক্সের ২৫ লাখ টাকা কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন শফিউল আলম। তিনি আরও জানান, ইউপি ভবনের দ্বিতীয় তলায় চেয়ারম্যান তার বড় ছেলে ফয়সাল শামীমকে দুটি রুম বরাদ্দ দেন। সেখানে টাঙ্গানো হয়েছে ‘আমরাই বাংলাদেশ ইউনিট-২’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের জেলা কার্যালয়ের সাইনবোর্ড। মূলত এখানে ব্যক্তিগত ব্যবসা পরিচালনা করা হয়। এ ছাড়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ভিতরবন্দ নামে কোনো মৌজা না থাকলেও এ ঠিকানা ব্যবহার করে শতাধিক ভিজিএফ কার্ডের চাল আত্মসাৎ করা হয়েছে। ৩৮৬১ নম্বর কার্ডধারী হযরত আলী অনেক আগে মারা গেছেন। অথচ তার নামেও ভিজিএফের চাল উত্তোলন দেখানো হয়েছে। ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নাউয়াপাড়া ঠিকানায় আবুল হোসেনের ছেলে সাহিনুর রহমানের নামে দুটি ভিজিএফ কার্ড ইস্যু করা হয়েছে। মন্ডলেরভিটা এলাকার মজিবর রহমানের স্ত্রী ময়না বেগম অভিযোগ করেন, আমার কার্ড নম্বর ৫৩১১। তার ভাগ্যে কখনো ভিজিএফের চাল জোটেনি। শুনেছি তালিকায় তার ন্যাশনাল আইডি কার্ড ও মোবাইল নম্বর ভুল ব্যবহার করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর