সোমবার, ১ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

লোডশেডিং পুঁজি করে দাম বাড়ছে বৈদ্যুতিক সামগ্রীর

ফেনী প্রতিনিধি

লোডশেডিং পুঁজি করে দাম বাড়ছে বৈদ্যুতিক সামগ্রীর

ফেনীতে দিনে রাতে হচ্ছে ব্যাপক হারে লোডশেডিং। লোডশেডিং ও অতিরিক্ত গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। এই লোডশেডিংকে পুঁজি করে ফেনীতে লাগামহীনভাবে বেড়ে গেছে বৈদ্যুতিক সামগ্রীর দাম। বৈদ্যুতিক সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে বৈদ্যুতিক চার্জার লাইট, চার্জিং ফ্যান ও আইপিএসএর বিভিন্ন সামগ্রী। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে ও ঘনঘন লোড শেডিং হওয়ায় ধনী-গরিব সবাই ক্রয় করছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের চার্জার লাইট এবং চার্জিং ফ্যানসহ নরমাল ফ্যান। ইতোমধ্যে বেড়ে গেছে মোমবাতির দামও। আগে যে মোমবাতিটি ১০ টাকায় পাওয়া যেত সে মোমবাতির দাম ১০ টাকা হলেও আকারে তা করে ফেলে হয়েছে অনেক সরু ও ছোট। বাজারে বিভিন্ন ধরণের ফ্যান বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকায়। সানকা, ওয়ালটন, ওসাকা, ফিয়াট, ডিফেন্ডার, নোভা, কেনেডি, সিবেক, কোনিওনসহ নানা ব্র্যান্ডের ফ্যান বাজারে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি পণ্যের দাম প্রায় ৫০০ টাকা করে বেড়েছে বলে জানা যায়। আর লাইট বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে দেড় হাজার টাকায়। কিছু কিছু চার্জিং লাইটের দাম ৫ হাজার টাকার উপরেও আছে। ৩০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকার মধ্যেও ছোট ছোট চার্জ লাইট পাওয়া যায়। যেগুলোর দাম আগে ছিল ১০০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে। গ্রাহকরা জানান, কিছু চার্জ লাইট আছে যেগুলো অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যায়। দোকানিরাও চায়নার এসব পণ্য বিক্রি করছে গ্যারান্টি দিয়ে। সার্কিট হাউজ রোডের চৌধুরী ইলেকট্রিকের মালিক জানান, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় ইলেকট্রিক পণ্যের দাম বেড়ে গেছে বলে পাইকাররা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

বাবুল নামের এক ক্রেতা জানান, দোকানে যে পণ্যই চাওয়া হয় সে পণ্যই সীমিত আকারে আছে এই অজুহাতে দোকানিরা দাম বেশি নিচ্ছে। এসএসকে সড়কের ব্যবসায়ী নুরুল আবসার বলেন, শীতে এসি বেচাকেনা তেমন একটা না হলেও এখন ভালোই হচ্ছে। গরমকালে এমনিতেই এসি বিক্রি ভালো হয় দাম তেমন একটি বাড়েনি। বিদ্যুৎ না থাকায় গ্রাহকরা চার্জিং ফ্যানই বেশি কিনছে। জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ কম পাওয়ায় ২ ঘণ্টা লোডশেডিং দেওয়ার কথা থাকলেও শহরে লোডশেডিং হচ্ছে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা। কিছু কিছু জায়গায় ৮-১০ ঘণ্টা লোড শেডিং হচ্ছে বলেও জানা যায়। কখনো কখনো টানা ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা লোডশেডিং দেওয়ায় বিদ্যুৎ গ্রাহকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। বিশেষ করে রাত ১ টা থেকে ২ টার দিকে লোডশেডিং দিয়ে সকাল ৫ টা, ৬টা পর্যন্ত লোডশেডিং দেওয়া স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারে না গ্রাহকরা। শহরের মহিপালের বাসিন্দা লায়লা আক্তার জানান, প্রাইভেট শিক্ষক তার বাচ্চাদের পড়াতে এসে এই মাসেই কয়েকদিন ফেরত গেছেন বিদ্যুৎ না থাকায়। বিদ্যুতের কারণে শিক্ষার্থীরা পড়তে চায় না। অতিরিক্ত গরম ও রাতের অন্ধকার থেকে বাঁচতে সাধারণ মানুষ ঝুঁকছেন চার্জার লাইট ও ফ্যানসহ আইপিএস এর দিকে। অনেকে অভিযোগ করেছেন যতটুকু সময় বিদ্যুৎ থাকে আইপিএসেও কাজ হয় না। ঠিকমতো আইপিএসএর ব্যাটারিও চার্জ হয় না। সদর উপজেলার ধলিয়ার আবদুর রহিম বলেন, দিনের বেলা বিদ্যুৎ কিছুটা থাকলেও সন্ধ্যার পর দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ থাকে না। ছাগলনাইয়া উত্তর সতেরর বাসিন্দা বাহার জানান, বিদ্যুৎ ১০-১২ ঘণ্টাই থাকে না। এ বিষয়ে ফেনী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম বলেন, চাহিদার তুলনায় জাতীয় গ্রিড থেকে বরাদ্ধ পাওয়া যাচ্ছে অর্ধেক এর চেয়েও কম। ফেনীতে ওয়াপদা ও পল্লী বিদ্যুতের এক সঙ্গে দৈনিক চাহিদা ১৩০ মেগাওয়াট। সেখানে আমরা দিনে পাচ্ছি ৫০ মেগাওয়াট ও রাতে পাচ্ছি ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। আমরা বিভিন্ন বাণিজ্যিক এবং গুরুত্বপূর্ণ অফিস আদালতের স্থানে কিছুটা লোডশেডিং কম করার চেষ্টা করি, বাকিটা সুষম বন্টন করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর