বুধবার, ৩ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

ঘুষ ছাড়া পাওয়া যাচ্ছে না পাসপোর্ট

শরীয়তপুর প্রতিনিধি

ঘুষ ছাড়া পাওয়া যাচ্ছে না পাসপোর্ট

বিশেষ চিহ্ন ছাড়া বেশির ভাগ পাসপোর্ট করতে পারছেন না গ্রাহকরা। শরীয়তপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছে সেবাপ্রার্থীরা। অফিসের অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীর যোগসাজশে অফিসের আনসার ও দালাল সদস্য দিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। এর ফলে হাজার হাজার মানুষ বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে বাধার শিকার হচ্ছে। অফিসটি এখন দালালসহ বিভিন্ন পেশাজীবী ও রাজনৈতিক প্রভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। অপরদিকে কর্তৃপক্ষের সহায়তায় বাইরে দালালচক্রের দৌরত্ম্য চরমে পৌঁছেছে। পাসপোর্ট অফিসে দায়িত্বরতরা কৌশলে দালালীর সঙ্গে জড়িত বলেও অভিযোগ সেবাপ্রার্থীদের। আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসটি ঘিরে রয়েছে কম্পিউটার দোকান ও এজেন্ট ব্যাংকিং। ফরম পূরণের আড়ালে চলছে রমরমা পাসপোর্ট দালালী। সবকিছু জেনেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস কর্তৃপক্ষ। শরীয়তপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে দালালদের হাত ধরে যেসব গ্রাহক এসেছে তাদের আবেদন ফরমে বিভিন্ন স্থানে বিশেষ চিহ্ন দিয়ে দেওয়া হয়। তাদের ফরম যাচাইয়ে কাউন্টারে শুধু চিহ্ন দেখা হয়। যেসব ফরমে চিহ্ন থাকে সেসব ফরম গ্রহণ করে পাসপোর্ট অফিসে। চিহ্নবিহীন ফরম বিভিন্ন কৌশলে ফেরত পাঠানো হয়। পরবর্তীতে দালালের হাত ধরে এলেই সব সমস্যার সমাধান হয় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। পাসপোর্ট করতে আসা হৃদয় বেপারি  নামে একজন ১০ দিন অফিসে ঘুরেও পাসপোর্ট করতে পারেননি। ডিসি অফিস ও ইউএনও অফিসে লিখিত আবেদন করেও কোনো সমাধান পাননি তিনি। পড়ে বাধ্য হয়ে দালালের মাধ্যমে পাসপোর্টের কাগজ জমা ও ফিঙ্গার দিতে পারেন। হৃদয় বেপারি মনে করেন কাগজপত্র সঠিক থাকার পরও দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়েছে। তাই এ দুর্নীতিবাজ কর্সচারী ও কর্মকতাদের বিচার চাইলেন  ভুক্তভোগী। এ পাসপোর্ট অফিসে প্রতিদিন গড়ে দুই থেকে তিন শতাধিক ফাইল জমা হয়। এর মধ্যে দালালের মাধ্যম ছাড়া ফাইল জমা দেওয়া হলে হয়রানির শিকার হতে হয় সেবাপ্রার্থীকে। প্রতিটি ফাইলে দালালকে দিতে হয় ২ থেকে ২০ হাজার টাকা। এভাবেই প্রতিদিন কয়েক লাখ টাকা ঘুষ-বাণিজ্য হয় এ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ঘিরে। অফিসটির কাউন্টার থেকে শুরু করে প্রতিটি ধাপেই ভোগান্তি পিছু ছাড়ে না সেবাপ্রার্থীর।

 দীর্ঘসময় লাইনে দাঁড়িয়েও ফাইল জমা না দিয়ে ফিরতে হয় অনেককে। এমন হয়রানির ঘটনা পাসপোর্ট অফিসে অহরহ চলছে জেনেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। উল্টো দায়সারা জবাব দেন এডি। সাদ্দাম হোসেন, সহকারী পরিচালক, আঞ্চলিক পাসপোর্ট আফিস, শরীয়তপুর বলেন, গ্রাহকদের সর্বোচ সেবা দিয়ে থাকি। কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়া কাউন্টার থেকে কোনো গ্রাহককে ফেরত দেই না। যেগুলো ফেরত যায় এনআইডি কার্ড , পাসপোট ঠিক না, সেগুলো ফেরত যায়। তবে কিছু কিছু গ্রাহক ফরম পূরণের ক্ষেত্রে  লোক দিয়ে কাজ করে। শরীয়তপুর জেলার বেশিরভাগ মানুষ প্রবাসমুখী। তাই বিদেশযাত্রায় পাসপোর্টের হয়রানিমুক্ত সেবা নিশ্চিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষ দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আসা ভুক্তভোগীদের।

সর্বশেষ খবর