বৃহস্পতিবার, ৪ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

রাজবাড়ীতে দুর্লভ আধুনিক চিকিৎসা

দেবাশীষ বিশ্বাস, রাজবাড়ী

রাজবাড়ীতে দুর্লভ আধুনিক চিকিৎসা

সদর হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

রাজবাড়ী জেলার ১১ লাখ মানুষের চিকিৎসাসেবার জন্য সদর হাসপাতাল অথবা প্রাইভেট ক্লিনিকে হয় না উন্নতমানের ওপিজি এক্স-রে (দাঁতের)। জেলার কোনো হাসপাতাল ও ক্লিনিকে নেই সিটিস্কান মেশিন। সামান্য দাঁতের ওপিজি এক্স-রে করার জন্য যেতে হয় পাশর্^বর্তী ফরিদপুরসহ অন্যান্য জেলায়। রাজবাড়ীর চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে সব মহলে। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, জেলা সদর হাসপাতালে ১০০ শয্যার অনুকূলে ৪২ জন সিনিয়র ও জুনিয়র কনসালটেন্ট এবং মেডিকেল অফিসারের বিপরীতে দায়িত্ব পালন করছেন মাত্র ২৮ জন। শূন্য পদগুলোর মধ্যে সিনিয়র কনসালটেন্ট শিশু, কার্ডিও, গাইনিসহ চর্ম ও যৌন চিকিৎসক নেই। আবাসিক মেডিকেল অফিসারের পদ শূন্য দীর্ঘদিন ধরে। নেই সহকারী সার্জনসহ প্যাথলজিস্ট। জেলার পাঁচ উপজেলায় ১০৩টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এসব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসার মান নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন। বিভিন্ন ক্লিনিকে রোগীর মৃত্যু, মানসম্মত চিকিৎসাসেবা না পাওয়া, চিকিৎসক ও কর্মচারীদের অশোভন আচরণসহ নানা অভিযোগ সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোর বিরুদ্ধে। গত মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের মধ্যে মোটরসাইকেল চালাচ্ছেন এক কর্মচারী। তৃতীয় তলায় রোগী আসা-যাওয়ার রাস্তায় রয়েছে দুটি মোটরসাইকেল। বিভিন্ন স্থানে ময়লা ফেলে রাখা হয়েছে। পুরো এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। পরিচ্ছন্নতাকর্মীর অভাবে এমন পরিস্থিতি বলে জানান কর্তৃপক্ষ। কয়েকজন রোগী অভিযোগ করেন, হাসপাতালে সময়মতো চিকিৎসক আসেন না। যেসব চিকিৎসক আসেন তারা রোগীকে ঠিকমতো সেবা দেন না। একটু জটিল রোগীর চিকিৎসাসেবা দিতে আগ্রহ দেখান না সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মাঝে মাঝে বন্ধ থাকে অপারেশন কার্যক্রম। রোগীর স্বজনেরা জানান, রাজবাড়ীর হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে সেবার চেয়ে দুর্ভোগ বেশি। রাজবাড়ী রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি হেলাল মাহমুদ বলেন, এখানে আসলে উন্নতমানের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার মতো সরকারি-বেসরকারিভাবে কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি। সরকারি হাসপাতালে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নেই বললেই চলে। রাজবাড়ীতে চিকিৎসাসেবার মান উন্নয়নে সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করা দরকার বলে মনে করেন তিনি। সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শেখ মোহাম্মদ আবদুল হান্নান বলেন, আমাদের চিকিৎসক সংকটের পাশাপাশি বেশি সমস্যা হচ্ছে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর অভাব। কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করে সাধ্যমতো সেবা দিতে।

সর্বশেষ খবর