রবিবার, ৭ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

খোলা আকাশের নিচে সারের স্তূপ

বিএডিসির গুদাম সংকট

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

খোলা আকাশের নিচে সারের স্তূপ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে রাস্তার পাশে চাতাল মাঠে স্তূপ করে রাখা সার -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বিএডিসির গুদাম সংকটের কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে বিভিন্ন স্থানে চাতালের মাঠে কয়েক সপ্তাহ ধরে খোলা আকাশের নিচে স্তূপাকারে রাখা হয়েছে নন ইউরিয়া (টিএসপি, এমওপি, পটাশ) সার। দেশের ১৫ জেলায় সরবরাহের জন্য প্রায় ২০ হাজার মেট্রিক টন সার এখানে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। খোলা আকাশের নিচে বিপুল পরিমাণ সার রাখায় এসব সারের গুণগত মান বজায় থাকবে কি না এ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তবে স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের দাবি, সারগুলো ভারী ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রাখায় এর গুণগত মান নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা নেই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশে সারের মজুদ বৃদ্ধিকল্পে চলতি অর্থবছরে কৃষি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় ২০ লাখ মেট্রিক টন নন ইউরিয়া সার আমদানি করা হয়েছে। যা বিএডিসির গুদামের ধারণক্ষমতার প্রায় ১০ গুণ বেশি।  ফলে দেশের ১৫ জেলার জন্য বরাদ্দকৃত প্রায় ২০ হাজার মেট্রিক টন সার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশের চাতালের মাঠে খোলা আকাশের নিচে রাখা হয়েছে। বিএডিসির সার ব্যবস্থাপনা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ৫-৭ বছর ধরে সরকার বিদেশ থেকে বার্ষিক চাহিদার অতিরিক্ত নন ইউরিয়া সার আমদানি করছে। এতে বিএডিসির গুদামগুলোতে ধারণক্ষমতার ২-৩ গুণ বেশি সার রাখতে হচ্ছে। এদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে নির্ধারিত সময়ে নন ইউরিয়া সার আমদানি ব্যাহত হয়ে কৃষি উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব যাতে না পড়ে সে জন্য সরকারের সিদ্ধান্তে বিগত কয়েক বছরের তুলনায় চলতি বছরে প্রায় ২০ লাখ মেট্রিক টন নন ইউরিয়া সার আমদানি করে বিএডিসি কর্তৃপক্ষ। অথচ সারা দেশে বিএডিসির সব গুদামের ধারণক্ষমতা সর্বোচ্চ ২ লাখ ১০ হাজার টন। এদিকে আমদানিকৃত নন ইউরিয়া সারের মধ্যে দেশের ১৫ জেলার (সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ) জন্য বরাদ্দকৃত প্রায় ২০ হাজার মেট্রিক টন (৪ লাখ বস্তা ও প্রতি বস্তা ৫০ কেজি) সার আমদানিকারকরা জাহাজ দিয়ে নদীপথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নদীবন্দরে আনে। এসব সার পরে স্থানীয় পরিবহন ঠিকাদারের মাধ্যমে নির্ধারিত জেলার বরাদ্দ অনুসারে পরিবহন করা হবে। এর আগে এসব সার বিএডিসির গুদামে সংরক্ষণের কথা ছিল। জানা গেছে, আশুগঞ্জ উপজেলার নোমান ট্রেডার্স, আসিফ পরিবহন, রাকিব পরিবহন ও মালেক অ্যান্ড সন্স নামে  ৪টি পরিবহন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসব সার ১৫ জেলায় পরিবহন করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। এসব সার তাদের আনলোড করে নির্ধারিত জেলার বিএডিসির গুদামে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম জানান, সারগুলো সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে কি না সে বিষয়টি তদারকি করতে একটি টিম পাঠিয়েছিলাম। তিনি বলেন, সারের বস্তাগুলো ত্রিপল দিয়ে ভালোভাবে মোড়ানো রয়েছে। যেন বৃষ্টির পানি স্পর্শ করতে না পারে।

সর্বশেষ খবর