শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

সড়ক ও সেতু সংস্কারের অভাবে ৩৯ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

সড়ক ও সেতু সংস্কারের অভাবে ৩৯ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে দুই দফা ভয়াবহ বন্যায় গ্রামীণ জনপদের কাঁচা-পাকা সড়ক, বেড়িবাঁধসহ বিভিন্ন সেতু-কালভার্টের ক্ষতি হয়েছে। পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে বন্যার ক্ষতচিহ্ন দৃশ্যমান হচ্ছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের  (এলজিইডি) ৬৮ কিলোমিটার সড়ক ও ১০টি সেতু-কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে ৩৯টি গ্রাম। সড়কে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। চলাচলের অনুপযোগী এসব সড়কে প্রতিনিয়ত ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। দ্রুত সংস্কারের দাবি স্থানীয়দের। এ ছাড়াও বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় আউশের বীজতলা নিয়ে কৃষক পড়েছেন বিপাকে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের দাবি, আগামী মৌসুমে আউশের মাঠ খালি থেকে যাবে। তাই জমির পানি না কমায় অনেকেই বাড়ির উঠানে আউশের বীজতলা করতে শুরু করেছেন। এদের একজন মিজান মিয়া বলেন, ‘আমার তিন কানি জমি পানির নিচে। এখন পানি না কমায় বাধ্য হয়ে বাড়ির উঠানে বীজতলা তৈরি করেছি।’ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর নাসিরনগর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নাসিরনগর উপজেলায় ভয়াবহ বন্যায় ১১২ কিলোমিটার পাকা সড়কের মধ্যে নির্মাণাধীনসহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৭ কিলোমিটার, ইটের সলিং রাস্তা ১৮ কিলোমিটার ও আরসিসি ঢালাইয়ের রাস্তা ১৩ কিলোমিটার। এ ছাড়াও সেতু-কালভার্ট ভেঙেছে ১০টি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা সদরের সঙ্গে ধরমন্ডল ইউনিয়নের পাকা সংযোগ সড়কের প্রায় ৯ কিলোমিটার ভেঙে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে। এতে ওই ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রাম দেওরত, গন্না, সাইয়াউক, ধরমন্ডল ও দৌলতপুর উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। এতে চরম ভোগান্তিতে আছে ওই এলাকার প্রায় ১৮ হাজার মানুষ। একই অবস্থা ভলাকুট, চাতলপাড় ও গোকর্ণ ইউনয়িনের। ভলাকুট-চাতলপাড় মধ্যবর্তী স্থানের বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নির্মিত প্রায় ১৬ কিলোমিটার সড়ক ও একটি সেতু ভেঙে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে প্রায় দুই মাস ধরে। এতে বিপাকে পড়েছে ওই এলাকার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। গোকর্ণ ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডর একটি সেতু বন্যার তোড়ে ভেসে যাওয়ায় উপজেলা সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। এতে চরম ভোগান্তিতে আছে সাধারণ মানুষ। বুড়িশ্বর ইউনিয়নের চানপাড়া-গঙ্গানগর মধ্যবর্তী স্থানে একটি সেতু ভেঙে যায়। এ ছাড়াও ওই এলাকার ৬ কিলোমিটার সড়কের পিচ, ইট-সুরকি, খোয়া উঠে গিয়ে সড়কে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কুন্ডা ইউনিয়নের তুল্লাপাড়া থেকে মছলেন্দপুর পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার, মছলেন্দপুর থেকে রানিয়াচং আশ্রয়ণ প্রকল্প পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চাতলপাড় ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক মো. মনিরুল হোসাইন বলেন, নাসিরনগর থেকে সড়কপথে কলেজে যেতে আমার ৪০ মিনিট সময় লাগত। ভলাকুট ও চাতলপাড় এলাকায় সেতু ও সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এখন নৌকা পথে ৩ ঘণ্টা সময় নিয়ে কলেজে যেতে হচ্ছে। ধরমন্ডল ইউনিয়নের মামুন মিয়া বলেন, পাকা রাস্তা ভেঙে এখন কাঁচা সড়কে পরিণত হয়েছে। রাস্তা দিয়ে মানুষ পায়ে হেঁটেই চলাচল করতে পারছে না। চারদিকে খানাখন্দ আর বড় বড় গর্ত। উপজেলা প্রকৌশলী সৈয়দ জাকির হোসেন বলেন, নাসিরনগরে বন্যার কারণে কাঁচ-পাকা সড়ক বেড়িবাঁধসহ সেতু-কালভার্টের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই সংস্কার কাজ শুরু হবে।

সর্বশেষ খবর