বুধবার, ১৭ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

সখীপুরে ঝুঁকিপূর্ণ ঘরে পাঠদান

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

সখীপুরে ঝুঁকিপূর্ণ ঘরে পাঠদান

দীর্ঘদিন ধরেই চলছে মাটির ঘরে কোমলমতি মাদরাসা শিক্ষার্থীদের পাঠদান। ৩৭ বছরের পুরাতন এই মাটির ঘরেই ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষকরা। অবকাঠামো উন্নয়ন না হওয়ায় প্রযুক্তিগত আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে টাঙ্গাইলের সখীপুরে ‘মওলানাপাড়া সালাফিয়া সিনিয়র মাদরাসার প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থী। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সীমান্তবর্তী এই এলাকার ‘মওলানাপাড়া সালাফিয়া সিনিয়র মাদরাসায় ১০৫ ফিট লম্বা জরাজীর্ণ একটি মাটির ঘর। সেই ঘরের ভিতরেই চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। আকস্মিক ঝড় বৃষ্টিতে যে কোনো সময় ভেঙে যেতে পারে এই মাটির ঘর। অন্য কোনো উপায় না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই পাঠদান করাচ্ছেন শিক্ষকরা।  মাদরাসা সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৪ সালে স্থাপিত ‘মওলানাপাড়া সালাফিয়া সিনিয়র মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার ১১ বছর পর ১৯৮৫ সালে এমপিওভুক্ত হয়। ওই বছরই এলাকার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একটি মাটির কোটা ঘর নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে এই মাদরাসার আশপাশে ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো মাদরাসা বা স্কুল নেই। এই মাদরাসায় একসঙ্গে বিজ্ঞান, মানবিক, মোজাব্বিদ ও হিফজুল কোরআন অর্থাৎ দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত চারটি শাখায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান দেওয়া হয়। বর্তমানে এই মাদরাসার ১৮ জন শিক্ষক ও ২ জন কর্মচারী আছে। এনটিআরসির আবেদনের প্রেক্ষিতে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরা এই মাদরাসার অবকাঠামোগত অবস্থা দেখে তারা যোগদান করতে চায় না। ভবনগত সমস্যার কারণেই অনেক শিক্ষক স্বল্পতা রয়েছে। শিক্ষকরা জানায়, জেলা পরিষদ থেকে দুইটা টিন সেট ভবন পেয়েছি তার একটিতে শিক্ষকদের বসার রুম, অন্যটি মেয়েদের কমন রুম হিসেবে ব্যবহৃত হয়। একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. ইমরান বলেন, আমাদের মাদরাসা ছাড়া বর্তমান সময়ে কোনো স্কুল বা মাদরাসায় মাটির ঘর নেই। এই মাটির ঘরের মাদরাসায় দ্বিতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিলাম সামনে এইচএসসি  পরীক্ষা দেব, এই সময়টুকুতে শিক্ষকদের মুখে শুধু শুনেই গেলাম আমাদের চারতলা বিল্ডিং হবে। কিন্তু কবে যে হবে তা আল্লাই জানে। মাদরাসার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষ মো. তালিবুর রহমান বলেন, মাদরাসার অবকাঠামোগত উন্নত না থাকায় অনেক ছেলেমেয়ে ভর্তি হতে চায় না। বাধ্য হয়েই দীর্ঘদিনের পুরনো মাটির ঘরেই ক্লাস নিচ্ছি। ঘরের টিনের চাল মরচে ধরেছে, মাটির দেয়ালও ফাটা ধরেছে। এতে যে কোনো সময় একটি দুর্ঘটনা ঘটতে পারে তাই সবসময় আশঙ্কায় থাকি। আমাদের একটি পাকা ভবনের খুবই প্রয়োজন। মাদরাসার গভর্নিং বডির সভাপতি মো. আতিকুর রহমান বলেন, ২০২০ সালে স্থানীয় সংসদ সদস্য মহোদয় এই মাদরাসার একটি অনুষ্ঠানে এসে তিনি একটি ভবন করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কিন্তু এখনো পাইনি। এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, এই উপজেলায় একটি মাত্র মাদরাসাই মাটির ঘর যা প্রতিষ্ঠানের শুরুতেই নির্মাণ করা হয়েছিল। এই মাদরাসাটি ওই দুর্গম এলাকায় শিক্ষা বিস্তারে ভালো ভূমিকা রাখছে। শিক্ষার গুণগতমান আরও উন্নত করতে এই মাদরাসার জন্য একটি পাকা ভবন খুবই প্রয়োজন।

সর্বশেষ খবর