নওগাঁর রাণীনগরে জমজমাটভাবে চলছে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ব্যাটারি পুড়িয়ে সিসা তৈরির কারখানা। এতে ব্যাটারির পোড়া অ্যাসিডের বিষাক্ত ধোঁয়ায় এলাকার পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়েছে। এমনকি শিশুরা বমি করে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। গত ৩ আগস্ট কারখানা বন্ধে অভিযান চালিয়ে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সঙ্গে ৭ দিনের মধ্যে কারখানা অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হলেও এখনো বন্ধ হয়নি। জানা গেছে, উপজেলার রাণীনগর-আবাদপুকুর রাস্তার খানপুকুরের পূর্বদিকে মেইন রাস্তার কয়াগাড়ী নামক স্থানে গড়ে উঠেছে অবৈধ সিসা তৈরির কারখানা। চতুর্দিকে টিন দিয়ে ঘিরে মধ্যখানে দুইটি চুলা তৈরি করে প্রতি রাতে ২৫০ পিসের বেশি পরিমাণ পুরাতন ব্যাটারি পোড়ানো হয়। এরপর সকাল হবার আগেই ট্রাকযোগে মালামাল নিয়ে চলে যায়। আশেপাশের গ্রামের লোকজন জানান, অজস্র ব্যাটারি পোড়ার বিষাক্ত ধোঁয়ার গন্ধে দম ভারী হয়ে ওঠে। শিশু-বয়ঃবৃদ্ধরা শ্বাস নিতেও চরম কষ্ট পায়। পোড়া অ্যাসিডের ঝাঁঝালো গন্ধে ঘুমাতে পারে না এলাকার লোকজন। পাশাপাশি বিভিন্ন ফল-ফলাদি ও আবাদি ফসলের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ার কারণে ফসলও হুমকির মুখে পড়েছে। স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৩ বছর আগে একই স্থানে সিসা তৈরির কারখানা গড়ে ওঠলে স্থানীয় লোকজনের চাপে এবং প্রশাসনের হস্তক্ষেপে কারখানা উঠে যায়। এরপর নতুন করে এখানে জায়গা ভাড়া নিয়ে প্রায় এক মাস হলো কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে। অবৈধ সিসা তৈরির কারখানার খবরে গত ৩ আগস্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইন ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালিয়ে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন এবং ৭ দিনের মধ্যে কারখানা অপসারণের নির্দেশ দেন। কিন্তু অভিযানে আদালতের দেওয়া সময় পার হলেও এখন পর্যন্ত কারখানা অপসারণ করা হয়নি বরং কারখানায় আরও জমজমাটভাবে ব্যাটারি পুড়িয়ে সিসা তৈরি করা হচ্ছে। কারখানার পার্শ্ববর্তী আমগ্রামের গ্রাম প্রধান ফিরোজ হোসেন বলেন, বিষাক্ত ধোঁয়ার প্রভাবে গা চুলকানিসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিচ্ছে। শিশুরা বমি করে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এছাড়া গাছপালাও মরতে শুরু করেছে। এতে এলাকার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। কারখানা বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
কারখানার ম্যানেজার আবদুর রহমান বলেন, প্রতি রাতে ব্যাটারি পুড়িয়ে প্রায় ৪ টনের মতো সিসা বের করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করে কারখানা অপসারণের জন্য সময় দিয়েছিল কিন্তু মহাজনের নির্দেশে কারখানা বন্ধ না করে কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে। কারখানা অপসারণ করা হবে কি না তা বলতে পারছি না বলে জানান তিনি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইন বলেন, কারখানা বন্ধে অভিযান চালিয়ে ২০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। কারখানার মালিকের অনুরোধে অপসারণ করতে সময় দেওয়া হয়েছিল। এরপরেও যেহেতু অপসারণ করেনি সেহেতু দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।