শনিবার, ২০ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরেছে আমন চাষে

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরেছে আমন চাষে

আষাঢ় শেষ হলেও মধ্য শ্রাবণেও আশানুরূপ বৃষ্টি না থাকায় বর্ষা মৌসুমেও দীর্ঘ খরার কবলে পড়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বরেন্দ্র অঞ্চল। ফলে চাষাবাদ ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। অনেকেই পানির অভাবে জমিতে আবাদ করতে পারেনি। তবে ইতোমধ্যে কম-বেশি বৃষ্টি হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে কৃষকের মাঝে, দেরিতে হলেও শেষ মুহূর্তে আমন ধানের চাষাবাদ করছেন কৃষকরা। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, বৃষ্টি দেরিতে হলেও কৃষকরা পুরো শ্রাবণ মাস পর্যন্ত আমনের আবাদ করতে পারবে। আর ইতোমধ্যে ৭৫ ভাগ জমিতে আমন ধান রোপণের কাজ শেষ করেছে কৃষকরা। তাই এবারও আমনের ভালো ফলনের আশা করছে সংশ্লিষ্ট দফতর। জানা গেছে, জেলার পাঁচ উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৫৩ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর আবাদ হয়েছিল ৫৩ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে এবং এরই মধ্যে ৩৭ হাজার ৩৪০ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদ হয়েছে। এবার সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় পুরো আষাঢ়জুড়ে প্রত্যাশিত চাষাবাদ ব্যাহত হয়। পরবর্তীতে শ্রাবণ মাসে বৃষ্টি হলে জমিতে চাষাবাদ নিয়ে ভাবতে হয়নি কৃষকদের। আর এ সুযোগে বৃষ্টির পানিতে আমনের জমিতে চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা, যা চলবে পুরো শ্রাবণ মাস পর্যন্ত। এ বছর জেলায় ৫৩ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং আমন ধানের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬২ হাজার ৯০০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় ৯ হাজার ৯০৫ হেক্টরের বিপরীতে ৮ হাজার ৭৫৫ হেক্টর আবাদ হয়েছে, নাচোলে ২৩ হাজার ৩৫ হেক্টরের বিপরীতে আবাদ হয়েছে ১৭ হাজার ১০৫ হেক্টর, গোমস্তাপুরে ১৬ হাজার ৫ হেক্টরের বিপরীতে ৯ হাজার ৭৩৫ হেক্টর, ভোলাহাটে ৪ হাজার ৩২০ হেক্টরের বিপরীতে পুরো জমি ও শিবগঞ্জে ৩৯৫ হেক্টরের বিপরীতে পুরো জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। এদিকে অনাবৃষ্টি প্রসঙ্গে নাচোল ইউনিয়নের নেজামপুরের কৃষক হারুনুর রশিদ বলেন, বিগত বছরগুলোতে এমন খরা মোকাবিলা করতে হয়নি। এবার আষাঢ় মাসে আশানুরূপ বৃষ্টি না হওয়ায় আবাদ করতে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল। এবারই প্রথম গভীর নলকূপের মাধ্যমে চাষাবাদ শুরু করা হয়েছিল।

পরবর্তীতে শ্রাবণ মাসে বৃষ্টি হওয়ায় স্বস্তি ফিরে এসেছে, এখন আর ধান রোপণে সমস্যা নেই। আরেক কৃষক লাল মোহাম্মদ বলেন, খরার মধ্যে ধান রোপণ পিছিয়ে পড়েছিল। সেচ খরচ বহনের কারণে মাত্র সাত বিঘা জমিতে আবাদ করা হয়েছিল। বৃষ্টি হওয়ায় বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে বাকি জমিতে ধান রোপণ করা হয়েছে। এভাবে বৃষ্টি হতে থাকলে ফলন ভালো হবে বলে আশাবাদী তিনি। এদিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, এ বছর তেমন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় কৃষকরা আমন ধান রোপণে পিছিয়ে পড়েছিল। তবে শ্রাবণের মধ্যভাগে বৃষ্টি হওয়ায় ধান রোপণে প্রভাব পড়বে না। আর রোপণ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আর কোনো ধরনের দুর্যোগ দেখা না দিলে চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। এ পর্যন্ত ৭৫ ভাগ জমিতে আমন চাষাবাদ হয়েছে বলেও জানান তিনি।

 

সর্বশেষ খবর