প্রায় দুই যুগ আগে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার লক্ষ্মীপুর-হাসিমপুর সড়কে ফানাই নদীর ওপর পাকা সেতু নির্মাণ হয়েছিল। প্রায় এক বছর আগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উদ্যোগে নদী পুনঃখনন করা হয়। তখন উজান থেকে আসা ঢলের তোড়ে দেবে যায় সেতুটি। নদীর এক পাশে বাঁধের ওপর দিয়ে যাওয়া রাঙ্গিছড়া-লক্ষ্মীপুর-গুতগুতি সড়কের কিছু স্থানও ধসে পড়ে। এরপর থেকে সেতুসহ ওই সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন ও পথচারীরা চলাচল করছেন।  এলাকাবাসী জানান, ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে লক্ষ্মীপুর-হাসিমপুর সড়কে ফানাই নদীর ওপর ৬০ ফুট দীর্ঘ সেতু নির্মিত হয়। ওই সেতু দিয়ে পৃথিমপাশা ইউনিয়নের পুরশাই, ভাতগাঁও, ও দেওগাঁও, কর্মধার হাসিমপুর এবং রাউৎগাঁওয়ের নর্তন, কবিরাজি ও পালগ্রামের অন্তত ২০ হাজার মানুষ প্রতিদিন সদর ইউনিয়নের রাঙ্গিছড়া বাজারসহ উপজেলা সদরে চলাচল করেন। এসব এলাকার শিক্ষার্থীরা সেতুর পূর্বপাশে অবস্থিত বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করে। জানা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে পাউবো প্রায় ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নদীর ৪০ কিলোমিটার এলাকা খননযন্ত্র (এক্সকাভেটর) দিয়ে পুনঃখনন করে। কাজ সম্পন্নের আগেই অতিবৃষ্টিতে উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নামে। তখন সেতুর মধ্যবর্তী স্থান দেবে যায়। একই সময় সেতুর পূর্বদিকে রাঙ্গিছড়া-লক্ষ্মীপুর-গুতগুতি সড়কের প্রায় ১০০ ফুট ধসে পড়ে। সরেজমিন দেখা যায়, সেতুর মাঝখানে দুটি পিলার হেলে পড়েছে। সেতু দেবে গেছে। ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়েই সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল চলাচল করছে। শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় লোকজন হেঁটে পার হচ্ছেন। সেতুর পূর্বপাশে সাইনবোর্ডে  ‘ঝুঁকিপূর্ণ সেতু, যান চলাচল নিষেধ-আদেশক্রমে-কর্তৃপক্ষ’ লেখা রয়েছে। এলজিইডির মৌলভীবাজার জেলা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আজীম উদ্দীন সরদার জানান, তিনি সরেজমিন ঝুঁকিপূর্ণ সেতু ও রাস্তা দেখেছেন। ‘অপরিকল্পিত’ নদী খননের কারণে এ অবস্থা হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, ওই স্থানে একটি নতুন সেতু নির্মাণের ব্যাপারে তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। ‘অপরিকল্পিত’ পুনঃখননের অভিযোগ অস্বীকার করে পাউবোর মৌলভীবাজার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তারুজ্জামান বলেন, ঢলের পানি নিষ্কাশনের জন্য ফানাই নদী পুনঃখনন করা হয়েছে। নদীর পরিমাপ অনুযায়ীই এ কাজ হয়েছে। সেতুটি হয়েছে অনেক আগে। তখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নদীর পরিমাপ বিবেচনায় আনেনি। ফলে সেতুর এ অবস্থা হয়েছে।