শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

খেয়া নৌকাই ভরসা ৪০ গ্রামের মানুষের

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

খেয়া নৌকাই ভরসা ৪০ গ্রামের মানুষের

শৈলকুপা উপজেলার কুমার নদের খেয়াঘাট -বাংলাদেশ প্রতিদিন

দুই পাড়ে কমপক্ষে ৪০ গ্রামের মানুষের বাস। যাদের নিকটবর্তী জেলা ও উপজেলা শহরে যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম কুমার নদে আড়ুয়াকান্দি ঘাটে খেয়া পারাপার। এলাকায় রয়েছে ছয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই আড়ুয়াকান্দি ঘাটের খেয়া পার হয়ে স্কুল-কলেজে যায় শিক্ষার্থীরা। বৃষ্টি এলে আর প্রতিষ্ঠানে যেতে পারে না তারা। ঘাটের ছয় কিলোমিটারের মধ্যে নেই কোনো সেতু। অর্ধশত বছর কষ্ট করে শৈলকুপা উপজেলার কুমার নদের দুই পাড়ের বাসিন্দারা চলাচল করছেন। তাদের একমাত্র ভরসা আড়ুয়াকান্দি-বিষ্ণুদিয়া ঘাটের এই খেয়া নৌকা। বছরের পর বছর এখানে সেতু নির্মাণের দাবি জানানো হলেও কোনো কাজে আসেনি। খেয়াঘাটে বসে থাকা আড়ুয়াকান্দি গ্রামের আনোয়ার হোসেন জানান, যে স্থানে ঘাটটি রয়েছে তার দুই পাশের গ্রামগুলোতে হাজার হাজার মানুষ বসবাস করেন। যারা বেশির ভাগই খেয়া পার হয়ে চলাচল করেন। স্থানীয় জামির হোসেন জানান, এই খেয়াঘাট ঘিরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আড়ুয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উমেদপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়, উমেদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, উমেদপুর বালিকা বিদ্যালয়, বাগুটিয়া জরিপ বিশ্বাস কলেজ ও বিষ্ণুদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। আরও গড়ে উঠেছে সীমান্ত বাজার, নাগিরহাট বাজার, রয়েড়া বাজার, বকশিপুর বাজার ও শেখরা বাজার। এতকিছুর পরও তাদের এলাকার মানুষের একটাই কষ্ট কুমার নদের এই স্থানে সেতু না থাকা। ঝুঁকি নিয়ে এই ঘাটে খেয়া পার হতে হয়। বর্ষা মৌসুমে নদের পানি  বেড়ে যাওয়ায় প্রায়ই নৌকায় পানি উঠে যায়। তখন অনেক ছেলে-মেয়ে ভয়ে প্রায়ই স্কুলে যেতে চায় না। শুষ্ক মৌসুমে আবার পানি কমে যাওয়ায় নৌকা চলতে পারে না। তখন বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়। বিষ্ণুদিয়া গ্রামের তুহিন রেজা বলেন, ঘাটে একটি মাত্র নৌকা। একটু বেশি যাত্রী না হলে নৌকা ছাড়েন না মাঝি। ফলে যাত্রীদের প্রায়ই দীর্ঘ সময় ঘাটে অপেক্ষা করতে হয়। খেয়াঘাটের মাঝি দবির উদ্দিন জানান, শুধু আয়ের জন্য নয়, জনসাধারণকে পারাপার করতে পেশাটা ধরে রেখেছেন। সরকারিভাবে এই খেয়াঘাট বন্দোবস্ত দেওয়া হয় না। প্রতিদিন ৩০০-৪০০ টাকা আয় হয়। যা দিয়ে কোনোরকম সংসার চালান। এলাকাবাসী জানান, সেতু না থাকায় পণ্য পরিবহনেও তাদের অতিরিক্ত টাকা গুনতে হয়। বর্তমানে প্রতি মণ কৃষিপণ্য বাজারে নিতে তাদের পরিবহন খরচ হয় ৫০-৬০ টাকা। অনেক পথ ঘুরে আসতে হয়। অথচ সেতু হলে ওই মাল পরিবহনে খরচ হবে মাত্র ১০ টাকা। এলজিইডির ঝিনাইদহ নির্বাহী প্রকৌশলী মনোয়ার উদ্দিন জানান, এখানে সেতু নির্মাণের আপাতত কোনো পরিকল্পনা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব কি করা যায়।

সর্বশেষ খবর