শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

শরণখোলা-ঢাকা ১৫ বছর পর লঞ্চ চলাচল শুরু

বাগেরহাট প্রতিনিধি

শরণখোলা-ঢাকা ১৫ বছর পর লঞ্চ চলাচল শুরু

১৫ বছর বন্ধ থাকার পর বঙ্গোপসাগর পাড়ে বাগেরহাটের শরণখোলা-ঢাকা রুটে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। গতকাল দুপুর ২টায় শরণখোলার রায়েন্দা ঘাট থেকে যাত্রী নিয়ে পূবালী-৭ নামে প্রথম লঞ্চটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। শরণখোলা থেকে এখন প্রতিদিন ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে একটি করে বিলাসবহুল লঞ্চ। এ লঞ্চ সার্ভিস ঘিরে সুন্দরবন উপকূলের ব্যবসায়ী ও কর্মজীবী মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে উচ্ছ্বাস। কোনোরকম বিড়ম্বনা ছাড়াই এ নৌপথে কম খরচে আসা-যাওয়া করতে পারবেন ঢাকা-চট্টগ্রামে কর্মরত হাজার হাজার গার্মেন্টস কর্মী, সুন্দরবন দেখতে আসা পর্যটকসহ সাধারণ যাত্রীরা। শরণখোলার রায়েন্দা পুরাতন লঞ্চ ঘাটের নদীতে পলি পড়ে ভরাট হয়ে যাওযায় ২০০৭ সালে শুরুতে শরণখোলা-ঢাকা লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রুটটি চালু করতে ২০০১৭ সালে বিআইডব্লিউটিএ পুরাতন লঞ্চঘাটটি স্থানান্তরিত করে বলেশ্বর নদীর পাড়ে সরিয়ে এনে পন্টুনসহ ওঠানামার সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করে। তার পরও মালিকরা এ রুটে লঞ্চ পাঠায়নি। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর দক্ষিণাঞ্চলে লঞ্চ ব্যবসায় ধস নামে। এ অবস্থায় অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক শরণখোলা-ঢাকা রুটে দৃষ্টি পড়ে লঞ্চ মালিকপক্ষের। লঞ্চ মালিকরা শরণখোলায় এসে প্রেস ক্লাবে সব মহলের সঙ্গে বৈঠক করে ফের শরণখোলা-ঢাকা রুটে প্রতিদিন লঞ্চ চলাচলের ঘোষণা দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা রায়েন্দায় নতুন লঞ্চঘাটে নোঙর করে। একই দিন দুপুর ২টায় যাত্রী নিয়ে পূবালী-৭ লঞ্চটি শরণখোলা থেকে ঢাকার সদরঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এখন থেকে প্রথমিকভাবে প্রতিদিন এ রুটে পূবালী-৭, মানিক-১, রেডসান-৫ নামে তিন তলাবিশিষ্ট বিলাসবহুল তিনটি লঞ্চ চলাচল করবে।  

শরণখোলা বাজারের একাধিক ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ জানান, শরণখোলা-ঢাকা রুটে লঞ্চ চলাচল শুরু হওয়ায় এখন থেকে কোনোরকম বিড়ম্বনা ছাড়াই এ নৌপথে খুব কম খরচে আসা-যাওয়া করতে পারবেন ঢাকা-চট্টগ্রামে কর্মরত হাজার হাজার গার্মেন্টস কর্মী, সুন্দরবন দেখতে আসা পর্যটকসহ সাধারণ যাত্রীরা। পাশাপাশি ঢাকাসহ অন্যান্য মোকাম থেকে খুবই সাশ্রয়ে এবং ঝুঁকিমুক্তভাবে তাদের বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক পণ্য আনতে পারবেন। আবার এ অঞ্চলের উৎপাদিত কৃষিপণ্য, সুন্দরবনের মধু এবং ইলিশসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ সরাসরি ঢাকায় সরবরাহ করতে পারবেন। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যের এক নতুন দিগন্তের সূচনা হবে। ফলে অর্থনীতির চাকা আরও গতিশীল হবে পিছিয়ে পড়া এ জনপদের। এমনই স্বপ্ন দেখছেন ব্যবসায়ী ও পেশাজীবীরা।

সর্বশেষ খবর