একসময় যাত্রীর ভিড়ে জমজমাট ছিল নীলফামারীর রেল স্টেশনগুলো। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াতের একমাত্র বাহন ছিল রেল। আগে স্টেশনগুলোতে সব ট্রেন দাঁড়ালেও বর্তমানে জেলার পাঁচটি স্টেশনে যাত্রাবিরতি নেই কোনো ট্রেনের। এতে চলাচলে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন স্টেশনসংলগ্ন এলাকার মানুষ। জানা যায়, বিভিন্ন এলাকার নামে স্টেশনগুলোর নামকরণ হয়েছে। স্টেশন ঘিরে ওই এলাকায় গড়ে উঠেছিল ব্যবসা-বাণিজ্য। স্টেশনগুলো বন্ধ থাকায় এখন সেখানে চলাচল নেই মানুষের। নীলফামারী কলেজ স্টেশন, তরণীবাড়ী, দাড়োরায়ানী, খয়রাতনগর এবং ডোমার উপজেলার মিরজাগঞ্জ স্টেশনের এ অবস্থা। পাঁচটি স্টেশন দীর্ঘ ২০ বছর ধরে বন্ধ থাকায় সুবিধাবঞ্চিত হচ্ছেন এলাকাবাসী। নীলফামারী কলেজ স্টেশনটির গুরুত্ব বিবেচনায় এ পথে চলাচলকারী সব ট্রেনের যাত্রাবিরতি ছিল। বর্তমানে রেলের উন্নয়নে নতুন রুট, কোচ, ইঞ্জিন সংযোগ হলেও গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনটি বন্ধ আছে। এ জেলায় ৫৯ কিলোমিটার রেলপথে মোট নয়টি স্টেশন রয়েছে। গোয়ালন্দ, আমনুরা, উত্তরা মেইল ট্রেন ২০ বছর আগে বন্ধ হয়েছে। নতুন করে ২০০৮ সালে চালু হওয়া ঢাকাগামী নীলসাগরসহ খুলনাগামী রূপসা, সীমান্ত, রাজশাহীগামী তিতুমীর, বরেন্দ্র একপ্রেস, রকেট মেইল ট্রেন চালু থাকলেও বিরতি নেই মিরজাগঞ্জ, তরণীবাড়ী, নীলফামারী কলেজ, দাড়োয়ানী এবং খয়রাতনগর স্টেশনে। মিরজাগঞ্জ গ্রামের স্কুলশিক্ষক আমিনার রহমান বলেন, ‘বাড়ির পাশে স্টেশন থাকলেও আমাদের ট্রেনে উঠতে হয় ১০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে। আগে এ স্টেশন থেকে ট্রেনে ওঠে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে এলাকার মানুষ দূর-দূরান্তে চলাচল করতেন। আমরা ছাত্র অবস্থায় বাড়ি থেকে ট্রেনে নীলফামারী কলেজে যাওয়া-আসা করেছি। বর্তমানে স্টেশনটি বন্ধ থাকায় সে সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এলাকাবাসী।’ রেলওয়ে সূত্রমতে, জেলার চিলাহাটি থেকে ঢাকাগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস, খুলনাগামী সীমান্ত, রূপসা ও রকেট মেইল, রাজশাহীগামী তিতুমীর ও বরেন্দ্র এক্সপ্রেস চলাচল করে। চিলাহাটি থেকে ছাড়ার পর জেলার নয়টি স্টেশনের মধ্যে এসব ট্রেনের বিরতি রয়েছে ডোমার, নীলফামারী পুরনো স্টেশন এবং সৈয়দপুর স্টেশনে। এ ছাড়া এ পথের চিলাহাটি সীমান্ত হয়ে চলছে ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ঢাকা পর্যন্ত আন্তদেশীয় ট্রেন।
নীলফামারী উন্নয়ন ফোরামের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ সরকার বলেন, ‘স্টেশনগুলো চালু হলে এলাকাবাসী রেল সুবিধার আওতায় আসবে। তাদের সময় বাঁচবে ও খরচ কমবে। পণ্য পরিবহনে সুবিধা বাড়বে। সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থান। নীলফামারী রেল স্টেশন মাস্টার ওবায়দুর রহমান রতন বলেন, বন্ধ থাকা এসব স্টেশনে বর্তমানে কোনো জনবল নেই। ফলে স্টেশনগুলোর কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।