শুক্রবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

জিকে প্রকল্পের পাম্প বিকলে দুশ্চিন্তায় কৃষক

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

জিকে প্রকল্পের পাম্প বিকলে দুশ্চিন্তায় কৃষক

জিকে প্রকল্পের বিকল হওয়া সেচ পাম্প

জিকে (গঙ্গা-কপোতাক্ষ) সেচ প্রকল্পের আওতায় তিনটি পাম্প মেশিনের মধ্যে দুটি বিকল হয়ে গেছে। এতে চলতি খরিফ-২ মৌসুমে আমনসহ ফসল উৎপাদন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কুষ্টিয়াসহ চার জেলার কয়েক লাখ কৃষক। তীব্র দাবদাহ আর খরার সঙ্গে পাম্প মেশিন বিকল হওয়ায় দিশাহারা তারা। সূত্র জানায়, বোরো এবং আমন অর্থাৎ খরিফ-১ ও ২ মৌসুমের ফসল উৎপাদনের জন্য কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ১৩ উপজেলার কয়েক লাখ কৃষক জিকে সেচ প্রকল্পের ওপর অনেকটা নির্ভরশীল। যদিও কয়েক বছর ধরে এই প্রকল্পের কাক্সিক্ষত সুফল থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন এ অঞ্চলের চাষিরা। তারপরও প্রকল্পটি পুরোপুরি চালু থাকলে কৃষকরা কিছুটা হলেও সুফল পেয়ে থাকেন। এ বছর ১৬ জুন শুরু হওয়া খরিফ-২ মৌসুমের শুরুতেই বড় ধাক্কা খেতে হয় কৃষকদের। আমন উৎপাদনের জন্য পানি সরবরাহ করার লক্ষ্যে পাম্প মেশিন চালু করতে গিয়ে প্রকৌশলীরা তিনটি মেশিনের মধ্যে মাত্র একটি সচল পান। জিকে প্রকল্পের প্রধান স্টেশন কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায়। একটি চ্যানেলের মাধ্যমে পদ্মা নদী থেকে পানি নিয়ে মূল খালে ফেলা হয়। জানা যায়, ১৯৫৪ সালে প্রায় ৪ লাখ হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে জিকে সেচ প্রকল্প চালু করা হয়। ২০০৫ সালে স্থাপন করা তিনটি পাম্প। যা দিয়ে বছরে ১০ মাস (১৫ জানুয়ারি থেকে ১৫ আক্টোবর পর্যন্ত) ২৪ ঘণ্টা পানি উত্তোলন করা যায়। বাকি দুই মাস রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পাম্প তিনটি বন্ধ রাখা হয়। তিনটি পাম্প সচল থাকলে চার জেলার ১৯৩ কিলোমিটার প্রধান খাল, ৪৬৭ কিলোমিটার শাখা খাল ও ৯৯৫ কিলোমিটার প্রশাখা খালে পানি সরবরাহ সম্ভব হয়। সেচ প্রকল্পের প্রধান এবং শাখা খালগুলোতে পানি থাকলে কৃষকরা নিরবচ্ছিন্ন সেচ সুবিধা পান। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বৃত্তিপাড়ার কৃষক রবজেল আলী জানান, এমনিতেই চাহিদামতো সার পাওয়া যাচ্ছে না। তার ওপর ডিজেলের দাম অনেক বেড়েছে। এর সঙ্গে পানি সংকটে তারা একবারেই দিশাহারা। কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর খামারবাড়ির উপ-পরিচালক ড. হায়াত মাহামুদ বলেন, দুটি পাম্প বিকল থাকায় আমন চাষাবাদ নিয়ে চরম ভোগান্তির মুখে পড়েছেন কুষ্টিয়াসহ এ অঞ্চলের কৃষকরা। পাম্প কোন কোন দিন সচল থাকে তাও বলা মুশকিল। ভেড়ামারা জিকে সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, পাম্প মেশিনগুলো জাপানের তৈরি। দেশের প্রকৌশলীর মাধ্যমে এটি সচল করা সম্ভব নয়। ইতোমধ্যেই জাপানি সংশ্লিষ্ট কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর