সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

পাঁচ বছর ধরে পরিত্যক্ত কলেজের ছাত্র হোস্টেল

নাসিম উদ্দীন নাসিম, নাটোর

পাঁচ বছর ধরে পরিত্যক্ত কলেজের ছাত্র হোস্টেল

উত্তরাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ নাটোরের নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা কলেজে ১৩টি বিষয়ে অনার্স ও আটটি বিষয়ে মাস্টার্সে প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী লেখাপড়া করেন। প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের জন্য একটি হোস্টেল থাকলেও ছাত্রদের হোস্টেলটি পাঁচ বছর ধরে পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে রয়েছে। ফলে ভাড়া বাসায় বা বেসরকারি হোস্টেলে থেকে লেখাপড়ার খরচ বহনে হিমশিম খাচ্ছে নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীরা। উত্তর জনপদের ঐতিহাসিক নাটোর শহরে উচ্চশিক্ষার প্রথম বিদ্যাপিঠ হিসেবে নাটোর কলেজ গড়ে ওঠে ১৯৫৬ সালে। ১৯৫৯ সালে এক সভায় নাটোর কলেজের নাম পরিবর্তন করে বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার স্বাধীনতার জন্য নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার বীরোচিত সংগ্রাম ও অবদান নতুন প্রজন্মকে স্বাধীনতার মূল্য অনুধাবনে অনুপ্রেরণা জোগাবে- এ প্রত্যাশা থেকে উদ্যোক্তারা কলেজের নামকরণ করেন নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা কলেজ। ১৯৯৮ সালে কলেজটিতে অনার্স কোর্স চালু করা হয়। বর্তমানে কলেজটিতে ১৩টি বিষয়ে অনার্স ও আটটি বিষয়ে মাস্টার্সে প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী লেখাপড়া করেন। প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের জন্য একটি হোস্টেল থাকলেও ছাত্রদের হোস্টেলটি ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় ২০১৭ সালে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এর পর আর হোস্টেলটি মেরামত করা হয়নি। উদ্যোগ নেওয়া হয়নি নতুন ছাত্র হোস্টেল তৈরির। কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, নতুন হোস্টেল নির্মাণের মতো আর্থিক সঙ্গতি তাদের নেই। ফলে, ভাড়া বাসায় বা বেসরকারি হোস্টেলে থেকে লেখাপড়ার খরচ বহনে হিমশিম খাচ্ছে নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীরা। ভাড়া বাসায় বা হোস্টেল থেকে লেখাপড়া করার মতো আর্থিক সঙ্গতি সবার নেই। তাই সরকারের কাছে নতুন ছাত্র হোস্টেল নির্মাণের দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। এক সময় শিক্ষার্থীদের পদভারে মুখরিত ছিল এ কলেজের ছাত্রাবাস। একটি দ্বিতল ও একটি একতলা বিল্ডিংয়ে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী এই ছাত্রাবাসে থেকে তাদের শিক্ষা জীবন অতিবাহিত করত। পরিত্যক্ত হওয়া জরাজীর্ণ এ ভবনটিতে বর্তমানে কার্যক্রম চালু কোনোভাবেই সম্ভব নয়। উপরন্তু যে কোনো সময় ভবন ধসে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। সরেজমিন দেখা গেছে, ভবনের আস্তর খসে পড়ছে। অনেক অংশে ফাটল ধরেছে। বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানিতে একাকার হয়ে যায় পুরো ভবন। দরজা-জানালা ভাঙা। এমন তো অবস্থায় বসবাসের অযোগ্য হয়ে যায় ছাত্রাবাসটি। এলাকাবাসী জানান, এক সময় এই ছাত্রাবাস পুরো দশের মধ্যে প্রসিদ্ধ ছিল। দেশের বিভিন্ন স্থানের শিক্ষার্থীরা ছাত্রাবাসে থেকে পড়াশোনা করেছেন। বিগত প্রায় ৫ বছর ধরে ছাত্রাবাসটি বন্ধ রয়েছে। কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রাজিবুল হাসান রাজিব বলেন, এনএস সরকারি কলেজ ঐতিহ্যবাহী একটি কলেজ। এ কলেজে দূর-দূরান্তের শিক্ষার্থীদের জন্য ছিল আবাসন সুবিধা হোস্টেল। আমাদের অনেক বড় ভাই এ হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করেছেন। কালের পরিক্রমায় হোস্টেলটি বন্ধ রয়েছে প্রায় পাঁচ বছর। এতে করে দূরের শিক্ষার্থীদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। তাই কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করব যাতে শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে নতুন হোস্টেল নির্মাণ করা হয়। এনএস সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ জহুরুল ইসলাম বলেন, এখানে ১০ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। একটি ছাত্র হোস্টেল একান্ত প্রয়োজন। আমরা নতুন ছাত্রাবাসের জন্য চেষ্টা-তদবির চালিয়ে যাচ্ছি।

সর্বশেষ খবর