সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ল্যাম্পি স্কিনে আক্রান্ত গরু দুশ্চিন্তায় খামারিরা

দিনাজপুর প্রতিনিধি

দিনাজপুরের বিভিন্ন উপজেলায় ল্যাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে গরু। এতে বিপাকে পড়েছেন খামারি ও প্রান্তিক কৃষকরা। অনেকে ভয়ে অসুস্থ গরু কম দামেই গরু বিক্রি করে দিচ্ছেন। ভাইরাসজনিত এ রোগ থেকে গবাদিপশু বাঁচাতে গরুকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে চলার তাগিদ দিয়েছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। প্রাণিসম্পদ বিভাগ বলছে, এ রোগ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। খামারিদের আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চললেই এ রোগ নিরাময় করা সম্ভব। এ সংক্রান্ত বিভিন্ন পরামর্শ খামারিদের দেওয়া হচ্ছে। তারা উপজেলা পশু সম্পদ দফতরে (পশু হাসপাতালে) গরু আনলে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। খামারি আজিজুল ইসলাম ও গৌতম মহন্ত বলেন, লাম্পি স্কিন রোগে (এলএসডি) আক্রান্ত গরু প্রথম দিকে কিছু খেতে চায় না। শরীরে জ¦র আসে। দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। জ¦রের সঙ্গে নাক-মুখ দিয়ে লালা বের হয়। পা ফুলে যায়। এরপর সারা শরীরে দেখা দেয় অসংখ্য গুটি বা চাকা। এতে লোম উঠে যায় এবং ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এই ক্ষত শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। বাসুদেবপুর গ্রামের আজিজুল ইসলামের দুটি গরু লাম্পি স্কিনে আক্রান্ত। এছাড়া নূরপুর গ্রামের আছির উদ্দিনের তিনটি ও গৌতম কুমার মহন্তের একটি গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। জেলার সব উপজেলায় কমবেশি এ রোগে আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। ফুলবাড়ী উপজেলার দাদপুর গ্রামের স্বদেশ মহন্তের একটি গরু ল্যাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ৮ আগস্ট মারা গেছে। বাসুদেবপুর গ্রামের গবাদিপশুর মালিক সামসুল হক বলেন, তার ১২টি গরুর মধ্যে লাম্পি স্কিন রোগে পাঁচটি আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি গরুকে পৃথকভাবে মশারির নিচে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আক্রান্ত গরুগুলো কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠছে। অনেক খামারি স্থানীয় পশু চিকিৎসকের পরামর্শে ইঞ্জেকশনসহ অ্যান্টিবায়োটিক ও প্যারাসিটামল ট্যাবলেট কিনে আক্রান্ত গরুকে খাওয়াচ্ছেন। আবার একই সঙ্গে কাঁচা হলুদের রস, খাবার সোডা ও করপুর মিশিয়ে গরুর শরীরে মালিশ করছেন অনেকে। ফুলবাড়ী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রবিউল ইসলাম বলেন, এটি ভাইরাসজনিত সিজনাল চর্ম রোগ। এই রোগ মশা ও মাছির মাধ্যমে ছাড়ায়।

 কোনো গবাদি পশু এ রোগে আক্রান্ত হলে তাকে আলাদাভাবে মশারির নিচে রাখতে হবে। আক্রান্ত গবাদিপশুকে চিকিৎসা প্রদানসহ পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ রোগ জেলার সর্বত্র দেখা দিয়েছে। তবে এটি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে। এ রোগ নিরাময়যোগ্য, খামারিদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

সর্বশেষ খবর