শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

মরে গেছে বিরল বৃক্ষ ‘আফ্রিকান টিকওক’

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি

মরে গেছে বিরল বৃক্ষ ‘আফ্রিকান টিকওক’

দেশের একমাত্র বিরল প্রজাতির বৃক্ষ ‘আফ্রিকান টিকওক’ গাছটি মরে গেছে। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে রাস্তার পাশে ছিল এই গাছটি। লাউয়াছড়ায় আসা পর্যটক ও গবেষকদের কাছে এ বৃক্ষটি খুবই আকর্ষণীয় ছিল। বন বিভাগের ধারণা, শত বছর আগে ব্রিটিশরাই এ গাছটি লাগিয়েছিল। বনের রেললাইনের পাশে আরও একটি আফ্রিকান টিকওক গাছ ছিল। সেটিও ২০০৬ সালে ঝড়ে উপড়ে পড়ে মারা যায়।  জানা যায়, প্রায় ১০০ ফুট উচ্চতা ও ১২ ফুট প্রস্থ এ আফ্রিকান টিকওক গাছের নিম্নাংশে পচন ধরে। বন বিভাগের সিলভিকালচার টিচার্স বিভাগ অনেক চেষ্টা করেও বৃক্ষটি থেকে কোনো বংশবিস্তার করাতে পারেনি। কারণ এ বৃক্ষটির কোনো বীজ ছিল না। ফুল ধরলেও তা ঝরে পড়ে যেত। বছর কয়েক আগে এ বৃক্ষ থেকে কাটিং সংগ্রহ করা হয়েছিল। তাতেও কোনো লাভ হয়নি। সরেজমিন দেখা যায়, মরা গাছটি উদ্যানের প্রবেশের রাস্তার ব্রিজের পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে। গাছের সব পাতা ঝরে গেছে। পচন ধরেছে গাছের গোড়া ও অন্যান্য জায়গায়। গাছের শুকনো ডালে পেঁচিয়ে আছে লতাজাতীয় গাছ ও অর্কিড।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, সম্ভবত ব্রিটিশরা ১০০ বছর আগে এই গাছটি এখানে রোপণ করা করেছিল। আমাদের দেশে আর কোথাও এ গাছটির খোঁজ পাওয়া যায়নি। হয় বজ্রপাতে, না হয় জীবনীশক্তি হারিয়ে গাছটি মারা গেছে। এই গাছটি মারা যাওয়ায় বন থেকে একটি প্রজাতি হারিয়ে গেল। এ গাছটি বেঁচে থাকলে হিসেবের খাতায় বনের একটি প্রজাতির সংখ্যা বেশি থাকত।তিনি বলেন, এর টিস্যুকালচার করে কিছু চারা গাছ সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছিল বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট। কিন্তু গবেষকরা সফল হতে পারেননি। বন গবেষক খাইরুল আলম বলেন, আমরা ২০০৬ সালে ঝড়ে পরে যাওয়া গাছ থেকে টিস্যু সংগ্রহের চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু পারিনি। তবে চেষ্টার তো শেষ নেই, বর্তমানে যে গাছটি মারা গেছে এখনো যদি ওই গাছের শীর্ষ অংশ কাঁচা থাকে তাহলে চেষ্ট করে দেখতে পারে। তিনি বলেন, এই প্রজাতিটি শুধু লাউয়াছড়াতেই ছিল। এটি আমাদের দেশি গাছ নয়, ভিন দেশি। তবে দেশি হোক বা বিদেশি এই গাছটি যদি কোনো ক্ষতি না করে তাহলে আমাদের সৌন্দর্যবর্ধক হয়ে থাকতে কোনো ক্ষতি নেই।

সর্বশেষ খবর