শিরোনাম
সোমবার, ৩ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

দুই উপজেলার ৩ লাখ মানুষের ঝুঁকিপূর্ণ পারাপার

রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

দুই উপজেলার ৩ লাখ মানুষের ঝুঁকিপূর্ণ পারাপার

নৌ দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে কোড়ালিয়া-পানপট্টি নৌ-রুটে আগুনমুখা নদীতে  সেবা চালুর দাবি দীর্ঘদিনের।  না থাকায় সারা দেশের সঙ্গে স¤পূর্ণ সড়ক পথে যোগযোগ বিচ্ছিন্ন রাঙ্গাবালী উপজেলা। চলমান বর্ষায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্পিডবোটে প্রমত্তা আগুনমুখা পাড়ি দিচ্ছে দুই উপজেলার ৩ লাখ মানুষ। সন্ধ্যার পরে পারাপারে থাকে না কোনো বাহন। রোগী ও পণ্য পরিবহন নিয়ে পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি। দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি স্থানীয়দের। চারদিকে সাগর আর নদী। মাঝখানের দ্বীপটির নাম রাঙ্গাবালী। লাল বালুর নামে নামকরণ করা হয়েছিল রাঙ্গাবালীর। ২ লাখ মানুষের এই দ্বীপটিতে রয়েছে নানা সম্ভাবনা। আছে দৃষ্টিনন্দন পর্যটন স্পট এবং কৃষি ও মৎস্য ভান্ডার। ২০১২ সালে উপজেলা ঘোষণা হয়ে ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো সারা দেশের সঙ্গে হয়ে ওঠেনি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। এ যেন এক ভিন্ন জগৎ। দুই উপজেলার মানুষের পারাপারের বাহন শুধু স্পিডবোট। চলমান বর্ষায় প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে স্পিডবোটেই পাড়ি দিতে হয় খরস্রোতা নদী আগুনমুখা। সন্ধ্যার পরে থাকে না একেবারেই কোনো বাহনই। আধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তির যুগে এসেও সারা দেশ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন থাকে এ জনপদ। যার ফলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এখানকার বাসিন্দাদের। তরমুজের রাজধানী খ্যাত রাঙ্গাবালীর কোটি কোটি টাকার তরমুজ ঘাটে বসেই নষ্ট হয়ে যায়। ভোগান্তির কোনো শেষ নেই যেন রোগীদের। চিকিৎসার জন্য নিতে যাওয়ার পথে এ নদীতে ট্রলার ও স্পিডবোডের মধ্যেই প্রাণ হারিয়েছে অসংখ্য রোগী। পায়রা বন্দরের জাহাজ নোঙর করবে এই রাঙ্গাবালীতেই। তাই সড়কপথে সংযোগ স্থাপন হলে এখানে গড়ে উঠবে শিল্পকারখানা। একটি  পাল্টে দিতে পারে এ জনপদের মানুষের জীবন। মৎস্য ব্যবসায়ী নাসির মৃধা বলেন, দেশে মাছের চাহিদার বড় একটি অংশ পূরণ করে রাঙ্গাবালী উপজেলা। কিন্তু  সেবা না থাকায় দিনদিন মাছ ঢাকা পৌঁছাতে ব্যয়বহুল খরচ হয়। প্রতিকূল আবহাওয়া থাকলে তখন ঘাটে বসেই মাছ পচে যায়। অসুস্থ রোগী হামিদা বলেন, আমি এক সপ্তাহ পর্যন্ত অসুস্থ কিন্তু নদীতে প্রচুর ঢেউ থাকায় নদীর পাড়ে এসে দুই দিন ফিরে গেছি। চিকিৎসার জন্য যেতে পারিনি। আজ বেশি অসুস্থ তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পাড়ি দিচ্ছি। বাহেরচর বাজারের ধানের ব্যবসায়ী আবু তাহের বলেন,  না থাকায় রাঙ্গাবালী থেকে মোকামে ধান নিয়ে যেতে যেমন ভোগান্তি পোহাতে হয়, তেমনি অতিরিক্ত খরচ হয়। আমরাও ভালো লাভ করতে পারি না, অন্যদিকে কৃষকও ন্যায্যমূল্য পায় না। পটুয়াখালী-০৪ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মহিব্বুর রহমান মহিব বলেন, আমি কয়েকবার এ ব্যাপারে সংসদে কথা বলেছি। একাধিকবার ডিও লেটার দিয়েছি। কয়েক দিন আগে রাঙ্গাবালীতে  চালুর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। সংস্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পরিদর্শনও করেছে। এখন বাস্তবায়নের অপেক্ষায়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর