রবিবার, ৯ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

বর্ষা শেষ না হতেই পানিশূন্য তিস্তা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

বর্ষা শেষ না হতেই পানিশূন্য তিস্তা

বর্ষা পুরোপুরি শেষ না হতেই প্রায় পানিশূন্য হচ্ছে তিস্তা নদী। নাব্য এতটাই হ্রাস পেয়েছে যে আসন্ন রবি মৌসুমে তিস্তা ব্যারাজের সেচ কার্যক্রম চালানো কঠিন হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ নদীর সঙ্গে জড়িয়ে থাকা উত্তর জনপদের জীববৈচিত্র্যও পড়বে মারাত্মক হুমকির মুখে -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বর্ষা শেষ না হতেই প্রায় পানিশূন্য হচ্ছে তিস্তা। অক্টোবরের শুরুতেই নদীর বুকে জেগেছে চর। এক মাস আগেও নদীতে ছিল প্রচুর পানি। শুষ্ক মৌসুম শুরুর আগেই নদীটি যেন মরে যাচ্ছে। বালুর বড় বড় স্তূপ পড়ে গতিপথ হারাতে বসেছে তিস্তা।

নদী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের গজলডোবায় প্রবেশ মুখে ও লালমনিরহাটের দোয়ানিতে ব্যারাজ নির্মাণ করে এ নদীর দুর্বার গতিকে রোধ করে দেওয়া হয়েছে। বছরের পর বছর বিভিন্ন ক্যানেলের মাধ্যমে তিস্তার স্রোত ঘুরিয়ে দেওয়ায় মরে গেছে তিস্তা। এখন নদীর বুকজুড়ে শুধু ধু-ধু বালুচর। নাব্য এতটাই হ্রাস পেয়েছে আসন্ন রবি মৌসুমে তিস্তা ব্যারাজের সেচ কার্যক্রম চালানো কঠিন হয়ে পড়বে। প্রতিদিন পানি কমছে। কোথাও সামান্য পানি রয়েছে আবার কোথাও দিগন্তজোড়া বালু চর। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, তিস্তা ব্যারাজে এই মুহূর্তে পানি রয়েছে ৩৩ হাজার কিউসেক। অথচ এই সময়ে পানি থাকার কথা ৪৫-৫০ হাজার কিউসেক। ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৬০-৯০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি প্রতিদিন কমছে বলে জানান, লালমনিরহাট পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে যে হারে পানি প্রবাহ কমে আসছে তাতে শিগগিরই মরা খালে পরিণত হতে পারে তিস্তা নদী। এ নদীর সঙ্গে জড়িয়ে থাকা উত্তর জনপদের জীববৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তিস্তা সেচ প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে উজানের পানির ওপর। নদীতে পানি কম আসায় সেচযোগ্য জমির আওতা কমছে। শুষ্ক মৌসুমে শুকিয়ে খাঁ খাঁ করে বালুচর। বর্ষাকালে পানি উপচে ভাঙনের মুখে পড়ে বসতবাড়ি, স্কুল-কলেজ, মাদরাসা, রাস্তাঘাট ও ফসলি জমি। এতে চাষাবাদ কমে বদলে যাচ্ছে এলাকার মানুষের জীবিকার মাধ্যম। চলতি বছর বর্ষা মৌসুম শেষ না হতেই লালমনিরহাটের পচি উপজেলার তিস্তাপাড়ের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় ধু-ধু বালুচর। চরের মধ্যে ভেঙে পড়ে আছে কয়েকটি সড়ক ও সেতু। জানা যায়, লালমনিরহাটের দোয়ানীতে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে তিস্তা সেচ প্রকল্প চালু হয় ১৯৯৮ সালে। লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও দিনাজপুরের ১২ উপজেলার ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়ার কথা এই প্রকল্পের আওতায়। পাউবো ডালিয়া ডিভিশনের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাশেদীন ইসলাম বলেন, উজান থেকে পানি কম আসায় সেচযোগ্য জমির আওতা কমানো হতে পারে। এলাকাবাসী জানান, ভারতের সঙ্গে তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি হলে তাদের ভোগান্তি আর থাকবে না।

সর্বশেষ খবর