বুধবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

শ্রেণিকক্ষ সংকটে ব্যাহত পাঠদান

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

শ্রেণিকক্ষ সংকটে ব্যাহত পাঠদান

ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের ক্ষত এখনো বয়ে বেড়াচ্ছে ঝিনাইদহের মহেশপুর পৌর এলাকার বৈঁচিতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠানটির সেমিপাকা ভবনের ছয় কক্ষের টিন উড়ে গিয়েছিল ওই ঝড়ে। কর্তৃপক্ষ চারটি কক্ষ মেরামত করতে পেরেছেন। অর্থের অভাবে বাকি দুটি কক্ষ এখনো মেরামত করা হয়নি। ফলে চারটি কক্ষে কষ্ট করে ক্লাস করতে হয় প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থীর। শিক্ষকরা বলছেন, ৫৫ বছরের এই প্রতিষ্ঠানে সরকারিভাবে তিন কক্ষের একটি মাত্র ভবন নির্মাণ হয়েছে। স্থানীয়ভাবে তৈরি সেমিপাকা ঘরেই চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। স্থানীয়রা জানান, মহেশপুর পৌরসভা এলাকার বৈঁচিতলা গ্রামে চার একর জমির ওপর ১৯৬৮ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি এলাকায় শিক্ষা প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। সরেজমিন দেখা যায়, মহেশপুর-বেগমপুর সড়ক ঘেঁষে বিশাল এলাকাজুড়ে বৈঁচিতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবস্থান। দক্ষিণ পাশের ছাদের ভবনের তিন কক্ষের একটি শিক্ষক মিলনায়তন। বাকি দুটিতে ক্লাস চলছে। আর উত্তর পাশের টিনশেড ভবনের ছয়টি কক্ষের তিনটিতে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। বাকি তিনটির একটিতে প্রধান শিক্ষক বসেন। অপর দুটির চালা নেই। শিক্ষকরা জানান, বিদ্যালয়ে বর্তমানে ৩৬৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষক আছেন ১০ জন, আর কর্মচারী একজন। শিক্ষক ও কর্মচারী সংকটও রয়েছে। প্রধান শিক্ষক ওয়ায়েজ উদ্দিন জানান, মহেশপুর পৌরসভা এলাকায় বালক-বালিকা মিলিয়ে পাঁচটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একটি বৈঁচিতলা। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এখানে শ্রেণিকক্ষ সংকট রয়েছে। এ অবস্থায় ২০২০ সালে সরকারের শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর তিন কক্ষের একটি একতলা ভবন করে দেয়। আর তারা নিজেরা জোড়াতালি দিয়ে ছয়টি কক্ষের একটি টিনশেড ঘরে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন। যা কখনো ভেঙে পড়ে, কখনো মেরামত হয়। এভাবে চলছে প্রতিষ্ঠানটি। এরই মধ্যে ২০২০ সালের ২০ মে আম্পানে ছয় কক্ষের টিনশেডের ঘরটির সম্পূর্ণ চাল উড়ে যায়। তারা প্রতিষ্ঠানটি পাঠদান উপযোগী করতে তিন লক্ষাধিক টাকা খরচে চারটি কক্ষ মেরামত করেছেন। এই কাজে শিক্ষক এবং প্রতিষ্ঠানের সাবেক ছাত্ররা টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। প্রধান শিক্ষক আরও জানান, ছেলেমেয়েদের কষ্টের কথা চিন্তা করে বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবন আর আপাতত পাঠদানের জন্য ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটি মেরামতের জন্য তিনি সরকারের বিভিন্ন দফতরে একাধিকবার আবেদন দিয়েছেন। কোনো কাজ হয়নি। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি অল্পদিন হলো সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছেন। দায়িত্ব নিয়ে ঘরের এই অবস্থার বিষয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করেন। চেষ্টা করে যাচ্ছেন, কীভাবে ভবনটি মেরামত করা যায়। মহেশপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দীনেশ চন্দ্র পাল বলেন, আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন এখনো ভালো হয়নি- বিষয়টি তার জানা নেই। তিনি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।

 

সর্বশেষ খবর