বুধবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে স্বামী-শাশুড়ির বিরুদ্ধে মামলা

ফরিদপুর প্রতিনিধি

ফরিদপুরে মিতু সোম (২৫) নামের এক গৃহবধূকে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে। গত সোমবার সকালে শ্বশুরবাড়ির লোকজন মিতুকে মারধর করে হাতে বিষের বোতল ধরিয়ে দিয়ে আত্মহত্যার কথা বললে মিতু সেই বিষের বোতল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে কানাইপুর বাসস্ট্যান্ডে এসে তা পান করে। পরে স্থানীয়রা মিতুকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এনে ভর্তি করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিতু মারা যায়। এ ঘটনায় মিতুর স্বামী সঞ্জয় মিত্র, শাশুড়ি জয়ন্তী মিত্রকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয়। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বলে জানান থানার ওসি এম এ জলিল। জানা গেছে, ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার কমলেশ্বর্দী গ্রামের অমল সোমের মেয়ে মিতু সোমের বিগত ৯ বছর আগে বিয়ে হয় রাজবাড়ী জেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের মৃত সন্তোষ মিত্রের ছেলে সঞ্জয় মিত্রের।

সাংসারিক জীবনে মিতু-সঞ্জয় দম্পতির সুদীপ্ত মিত্র নামের আট বছরের একটি সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য বিভিন্ন সময় মিতুকে মারধর করা হতো। এ নিয়ে স্বামী সঞ্জয়ের সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকত। মিতু তার পরিবারের কাছ থেকে একাধিকবার টাকা এনে তার স্বামীকে দেয়। সম্পত্তি টাকার জন্য ফের মিতুকে চাপ দেয় তার স্বামী ও শাশুড়ি। এ নিয়ে ১৫ অক্টোবর মিতুকে প্রচণ্ড মারপিট করা হয়। মিতু মারপিট ও টাকার বিষয়টি ফোনে তার পরিবারকে জানায়। ১৭ অক্টোবর টাকা এনে দিতে না পারায় সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ফের মিতুকে মারপিট করা হয়। পরে মিতু ও তার শিশু সন্তানকে বাড়ি থেকে জোরপূর্বক বের করে দেয় স্বামী সঞ্জয় ও শাশুড়ি জয়ন্তী মিত্র। বাড়ি থেকে বের করার সময় মিতুর হাতে একটি বোতল দিয়ে বলা হয়, ‘তুই এ বোতলের বিষ খেয়ে মর’। মিতু তার শিশু সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়ে পথিমধ্যে ফরিদপুরের কানাইপুর বাসস্ট্যান্ডে এসে বোতলের মধ্যে থাকা বিষপান করে। এতে সে মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিতু মারা যায়। সোমবার রাতে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় মামলা করে মিতুর বাবা অমল সোম। এ বিষয়ে অভিযুক্তদের কেউ বাড়িতে না থাকায় তাদের কোনো মন্তব্য জানা যায়নি। কোতোয়ালি থানার ওসি এম এ জলিল জানান, আত্মহত্যার প্ররোচনার বিষয়ে একটি মামলা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সর্বশেষ খবর