বগুড়ায় অপহরণকারী চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১২। একই সঙ্গে অপহরণ হওয়া আকাশ হোসেন (২৪) ও সুমাইয়া আক্তারকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তারা হলো শাকিল হোসেন (২৪), জুয়েল রানা (২৫) ও সাকিব হোসেন (২২)। র‌্যাব-১২ বগুড়ার কোম্পানি কমান্ডার তৌহিদুল মবিন খান গতকাল সকালে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। তিনি জানান, গ্রেফতার আটজন তরুণ মিলে একটি অপহরণকারী চক্র গড়ে তোলে। প্রায় তিন বছর ধরে তারা শহরের বিভিন্ন স্থানে সাধারণ মানুষদের সুযোগ বুঝে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় করত। গত সোমবার আকাশ ও সুমাইয়া পূর্ব পরিচিত হওয়ার সুবাদে শহরের মাটিডালি বিমান মোড়ে দেখা করতে যান। এ সময় গ্রেফতার হওয়া তিন অপহরণকারী তাদের সহযোগীদের নিয়ে আকাশ ও সুমাইয়াকে ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে জিম্মি করে। পরে তাদের সিএনজি চালিত অটোরিকশায় উঠিয়ে শহরে নারুলী আকাশতারার রেললাইন এলাকায় নিয়ে যায়। অপহরণকারীরা সেখানে অপহৃত আকাশ ও সুমাইয়াকে জিম্মি করে তাদের নিজ নিজ মুঠোফোন থেকে পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করে।

দাবিকৃত মুক্তিপণ না পেলে তাদের হত্যার হুমকিও দেয় অপহরণকারীরা। এ ছাড়াও প্রাথমিকভাবে সুমাইয়ার পরিবারের থেকে বিকাশের মাধ্যমে ৩ হাজার টাকা আদায় করে তারা। আকাশের স্ত্রী বগুড়া সদর থানায় জিডি করার পরে বিষয়টি বগুড়া র‌্যাবকে অবহিত করে। এরপরে মাত্র দুই ঘণ্টার মাথায় র‌্যাব-১২ বগুড়া প্রযুক্তির সহায়তায় অপহৃতদের অবস্থান নিশ্চিত করে অভিযানে নামে। একপর্যায়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নারুলী আকশাতারা এলাকার একটি ধানের জমি থেকে আকশাকে ও তার পাশের একটি এলাকা থেকে সুমাইয়াকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া তিন অপহরণকারী ধরা পড়ে যায়। তবে র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে প্রায় সাত থেকে আটজন অপহরণকারী ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। র‌্যাব-১২ কোম্পানি কমান্ডার আরও জানান, অভিযানের সময় পালিয়ে যাওয়া অপহরণকারীদের মধ্যে রাহুল, ইমেন ও হাছান নামের তিনজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়াও অজ্ঞাত আরও চার থেকে পাঁচজনকে শানাক্তসহ সবাইকে গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত আছে। এই ঘটনায় গ্রেফতার শাকিলের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা রয়েছে। ১১ মাস জেলহাজতে থাকার পরে সম্প্রতি তিনি জামিনে যুক্তি পান। এরপর আবারও শাকিল অপরাধমূলক কর্মকান্ড শুরু করে। র‌্যাব-১২ এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতাররাসহ শনাক্ত হওয়া তিনজন ও অজ্ঞাত চার থেকে পাঁচজনের বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় মামলা হয়েছে।