বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে চলতি অক্টোবরেই বাণিজ্যিকভাবে চালু হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন নতুন এক ইউনিট। ইতোমধ্যে জ¦ালানি সাশ্রয়ী এ ইউনিটটির পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এ ইউনিট থেকে জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে অন্তত ৪২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। এতে আশুগঞ্জ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাতটি ইউনিট থেকে সব মিলিয়ে প্রায় ১৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে। ফলে কমবে লোডশেডিং।  প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশের বৃহত্তম বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লি.। ২০০৩ সালের ১ জুন যাত্রা শুরু গুরুত্বপূর্ণ এ পাওয়ার স্টেশনের। বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের জন্য পুরাতন ইউনিট সমূহের স্থলে এসটি/৩ গ্যাস ব্যবহার করে উচ্চ ক্ষমতা ও জ¦ালানি দক্ষতাসম্পন্ন আশুগঞ্জ ৪০০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্ট (পূর্ব) প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ২০১৫ সালের ২২ অক্টোবর এটি একনেকের অনুমোদন লাভ করে। ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সিং মাধ্যমে কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্ট (পূর্ব) প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর ফলক উন্মোচন করেন। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ইউনিটটি স্থাপনে চীনের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় বাংলাদেশ সরকার। ওই বছরের জুন মাস থেকে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এডিবি ও আইডিবির এপিএসসিএল এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ১৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ৩১ অক্টোবরে মধ্যে এটি বাণিজ্যিকভাবে চালু হবে। আশুগঞ্জ ৪০০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইেকেল পাওয়ার প্ল্যান্ট (পূর্ব) এর প্রধান প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক আব্দুল মজিদ বলেন, চাহিদামতো গ্যাস প্রাপ্তি নিশ্চিত না হওয়ায় কয়েক দফা প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়। সবশেষ চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার চূড়ান্ত সময় নির্ধারিত হয়েছে। আমরা আশা করছি ৩১ অক্টোবরের মধ্যেই বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে আসতে পারব।

ইতোমধ্যে জাতীয় গ্রিডে সিম্পল মুডে ৩০৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দিতে সক্ষম হয়েছি। কম্বাইন্ড মুডের জন্য হটকমিশনিং শুরু হয়েছে। আশুগঞ্জ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকৌশলী ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এম সাজ্জাদুর রহমান জানান, বর্তমানের আশুগঞ্জ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ছয় ইউনিট চালু রয়েছে। এগুলো ১৩০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন হলেও গ্যাস স্বল্পতার কারণে ১ হাজার থেকে ১১০০ মেগওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে দেওয়া হচ্ছে। কম্বাইন্ড সাইকেল প্ল্যান্টগুলো থেকে কম জ¦ালানিতে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছি। চলতি মাসে নতুন প্ল্যান্টটি উৎপাদনে এলে বিদ্যুতের সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি হবে।