মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

বন্যহাতির তাণ্ডবে নির্ঘুম রাত

নালিতাবাড়ী প্রতিনিধি

ভারত থেকে আসা পাহাড়ি বন্যহাতির তাণ্ডবে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের কৃষকেরা। সন্ধ্যা হলেই হাতির দল নেমে আসে পাহাড় থেকে লোকালয়ে। কয়েক দিনে তাণ্ডবে চালিয়ে জমির ফসল খেয়ে ও পা দিয়ে পিষিয়ে নষ্ট করে ফেলছে। ঢাকঢোল বাজিয়ে ও আগুন জ্বালিয়ে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছেন কৃষকরা।

সরেজমিনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক জানায়, এক সপ্তাহ ধরে বন্যহাতির বিশাল একটি দল অবস্থান করছে সীমান্ত ঘেঁষা ভারতীয় মেঘালয় রাজ্যের চেরেংপাড়া পাহাড়ি অঞ্চলে। হাতির এই দলটি প্রায় প্রতিদিন উপজেলার পানিহাটা এলাকার মারং গোঁফ ও তালতলা দিয়ে নেমে আসছে আবাদি জমিতে। কয়েক দিনের অব্যাহত হাতির অত্যাচারে পানিহাটায় বিনষ্ট হয়েছে প্রায় ২০ একর জমির আমন ধানখেত। দিশাহারা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক। নতুন করে চারা রোপণের আর কোনো উপায় নেই। চলতি বছর বন্যহাতির দল প্রথমে বোরো ধান, গাছের কাঁঠাল খেয়ে সাবাড় করে ফেলে। পরে আমনের বীজতলা মাড়িয়ে নষ্ট করে। এখন আমনের আবাদ বিনষ্ট করছে। খাদ্যের সন্ধানে অভুক্ত হাতিগুলো লোকালয়ে এসে ছোটাছুটি করে। হাতির তাণ্ডবে এখন তাদের রাত কাটে নির্ঘুমে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক-জয়নাল আবদীন, আবুল হোসেন, আকবর আলী, আ. কাদির, আশালতা, নুরুলা চিশিম বলেন, প্রতি বছর বন্যহাতিগুলো ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করে। আমরা বন্যহাতির আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে সরকারের সহযোগিতার দাবি জানাই। পানিহাটা এলাকার এলিফেন্ট রেসপন্স টিমের সভাপতি যোসেফ মারাক বলেন, হাতিগুন্ডেন্ডেলা পাহাড় থেকে দলবেঁধে নেমে আসে ফসলের খেতে। রাত জেগে পাহারা দিয়েও রক্ষা হয় না। আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা ও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতি পূরণের দাবি জানাই। রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম খোকা হাতির আক্রমণ রোধে সরকারের স্থায়ী পদক্ষেপ কামনা করে বলেন, বছরের পর বছর ধরে বন্যহাতির তাণ্ডবে পাহাড়ি মানুষের জীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলমগীর কবির বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করে সামনে কোনো প্রণোদনা পুনর্বাসন কর্মসূচিতে তাদের অন্তর্ভুক্তি করে কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া হবে। আর পোড়াগাঁও কমিটি ঢেলে সাজানো হবে।

সর্বশেষ খবর