মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

প্রতিপক্ষকে গ্রামছাড়া করতে নিহতের নাটক

নরসিংদী প্রতিনিধি

প্রতিপক্ষকে গ্রামছাড়া করতে ‘নিহতে’র নাটক সাজানোর অভিযোগ উঠেছে। আর এ নাটক মঞ্চায়নে সহযোগিতা করেছেন খোদ পুলিশের উপপরিদর্শক। এমন অভিযোগ করেছেন নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চানপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শামসু মেম্বার। ফলে রায়পুরার মোহিনীপুরে প্রতিপক্ষের হামলা-মামলা ও টেঁটাযোদ্ধাদের ভয়ে ইউপি সদস্যসহ গ্রামছাড়া অর্ধশতাধিক পরিবার। গ্রামে ফিরলেই প্রাণনাশের হুমকিসহ বাড়িঘরে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে চানপুর ইউনিয়নের টেঁটা সর্দার শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

ভুক্তভোগীরা নিরুপায় হয়ে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি ও নরসিংদী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু আড়াই মাস যাবৎ এলাকার একাংশের লোকজন গ্রামছাড়া হলেও বিষয়টি সমাধানে পুলিশ বা স্থানীয় রাজনীতিকদের কেউ সমাধানের উদ্যোগ নেননি। তাই পুনরায় টেঁটাযুদ্ধসহ প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন ভুক্তভোগীরা। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জানা যায়, রায়পুরার মেঘনা নদী বেষ্টিত দুর্গম চরাঞ্চল চানপুর। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে শফিকুল ইসলামের সঙ্গে ইউপি সদস্য শামসু মেম্বারের দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এর জেরে গত ৫ আগস্ট দুই পক্ষে রক্তক্ষয়ী টেঁটাযুদ্ধে উভয় পক্ষের কয়েকজন হতাহত হন। ওই যুদ্ধে শফিকুল ইসলামের সমর্থক আবদুস সালাম মারা গেছেন এমন খবর প্রচার করা হয়। চানপুরের কুড়েরপার পুলিশ ক্যাম্পের এসআই মুরাদ গ্রামবাসীকে ফোন করে সালামের নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন এবং শামসু মেম্বারের সমর্থকদের গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যেতে বলেন। ওই সময় বাড়িঘরে হামলা-মামলা ও প্রাণভয়ে শামসু মেম্বারের সমর্থকরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যান। কিন্তু সালাম মারা যাননি। এর পর থেকে অর্ধশতাধিক পরিবার গ্রামছাড়া।

যারা এলাকায় রয়েছেন তাদের বাড়িঘর অক্ষত রাখতে তাদেরও গুনতে হচ্ছে মোটা অঙ্কের চাঁদা। বিষয়টি নিয়ে রায়পুরা থানাসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। চানপুর ইউপি সদস্য শামসু মেম্বার বলেন, ‘তুচ্ছ একটি ঘটনা কেন্দ্র করে গ্রামে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষে একজন মারা গেছেন প্রচার করে আমাদের গ্রামছাড়া করা হয়েছে। এতে প্রতিপক্ষের হয়ে সহযোগিতা করেছেন পুলিশের এসআই মুরাদ। বাস্তবে কেউ মারা যাননি। আমাদের ভয় দেখিয়ে গ্রামছাড়া করেছেন। এখন গ্রামে ঢুকতে গেলেই আমাদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’ অভিযোগ অস্বীকার করে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তাদের গ্রামে ঢুকতে কেউ বাধা দেয়নি। তাদের অপকর্মের জন্য তারা গ্রামে আসেন না। মূলত গ্রামে আধিপত্য বিস্তারে তারা সন্ত্রাস চালান। মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালামকে মেরে একটি পা ভেঙে দিয়েছেন। তাই তারা গ্রামে আসেন না।’ রায়পুরা থানার সহকারী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সত্যজিৎ ঘোষ বলেন, ‘লোকজন গ্রামের বাইরে আছেন এটা আমাদের জানা নেই। বিষয়টি জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সর্বশেষ খবর