শনিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

সিত্রাংয়ে লন্ডভন্ড দেড় হাজার বিঘা কলাবাগান

কামরুজ্জামান সোহেল, ফরিদপুর

সিত্রাংয়ে লন্ডভন্ড দেড় হাজার বিঘা কলাবাগান

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের তান্ডবে ফরিদপুর সদর উপজেলার পদ্মার তীরবর্তী ডিক্রিরচর ও নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের কলাবাগানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। লন্ডভন্ড হয়ে গেছে এ দুটি ইউনিয়নের প্রায় দেড় হাজার বিঘা জমির কলাবাগান। ফলে প্রায় ২০ কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন বাগান মালিকেরা। ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবে আয়ের একমাত্র পথ হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন কলা বাগানের মালিকেরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফরিদপুর জেলার ডিক্রিরচর ও নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের চরাঞ্চলবাসীর অন্যতম প্রধান ফসল হচ্ছে কলা চাষ। চরাঞ্চলের মাটি কলা চাষের উপযোগী হওয়া এবং লাভজনক হওয়ায় এ অঞ্চলের বিশাল এলাকাজুড়ে করা হচ্ছে কলা বাগান। ডিক্রিরচর ইউনিয়নের পদ্মার চরের মোহন মিয়ার হাটের ৩৮ দাগ, সামাদ মাদবরের ডাঙ্গী, ইমান আলী মাদবরের ডাঙ্গী, ভুইয়া ডাঙ্গী, কাজেম মাদবরের ডাঙ্গী, মিলন পালের ডাঙ্গীতে ব্যাপক হারে কলাবাগান করা হয়। এ ছাড়া নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের ৩৮ দাগ, মনসুরাবাদ, কবিরপুর চর, চর সালেপুর, হাজারবিঘা কলা বাগানের আবাদ করা হয়। সব মিলিয়ে এ দুই ইউনিয়নে প্রায় ৬৫০ হেক্টর জমিতে কলার আবাদ করা হয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্ত বাগান মালিকের মধ্যে আমিন উদ্দিনের ১০০ বিঘা, মো. জাহাঙ্গীরের ৭০ বিঘা, আমজাদ সিকদারের ৪০ বিঘা, আবদুর রাজ্জাকের ৩৫ বিঘা, মো. নইমুদ্দিনের ১৫০ বিঘা, কাদের খাঁয়ের ৮০ বিঘা, সেকেন মোল্লার ২০ বিঘা, আবুল কাসেমের ২০ বিঘাসহ মোট ৫৫০ কলাবাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝড়ের কারণে প্রতিটি বাগানের বেশির ভাগ কলা গাছ ভেঙে গেছে। বাগান মালিকেরা জানান, আর এক সপ্তাহ পড়েই তারা কলাগুলো বিক্রি করতে পারতেন। অনেক কলা ব্যবসায়ী বাগান মালিকদের কাছে টাকা দিয়ে রেখেছিলেন। কলা বাগান ধ্বংস হওয়ার কারণে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছেন বাগান মালিকেরা। যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা কোনো মতেই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয় বলে বাগান মালিকেরা জানান। কলাবাগানের মালিক আবুল কাসেম জানান, তিনি গত কয়েকদিন আগে তার বাগানের বেশকিছু কলা বিক্রি করেছেন। কয়েকদিন পর সব কলা তিনি বিক্রি করতে পারতেন। তিনি বলেন, তার বাগানের ৫ হাজার কলা গাছ নষ্ট হয়েছে। আরেক বাগান মালিক আমির উদ্দিন জানান, তিনি গত বছরের তুলনায় এ বছর বেশি পরিমাণ জমিতে কলার আবাদ করেছিলেন। তার বাগানের সব গাছই ভেঙে গেছে। আরেক বাগান মালিক মো. জাহাঙ্গীর জানান, তিনি ধারদেনা করে এ বছর কলা বাগান করেছেন। ঝড়ের কারণে তার সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। এ বছর তিনি একেবারেই নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। কলা বাগান মালিকেরা জানান, ক্ষতিগ্রস্ত কলা বাগান মালিকদের ক্ষতির বিষয়টি সরকারের নজরে দেওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. জিয়াউল হক। তিনি বলেন, কলা বাগান মালিকদের ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করার কাজ চলছে। সরকারের তরফ থেকে তাদের সহযোগিতা করা হবে।

সর্বশেষ খবর