রবিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

একই পরিবারের পাঁচ সদস্য দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকা চর সুভারকুটি গ্রামের বাসিন্দা শহিদার রহমান। স্বামী-স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্য সংখ্যা সাতজন। এদের মধ্যে শহিদার রহমান, তার স্ত্রীসহ পাঁচজনই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। সংসারে কর্মক্ষম ব্যক্তি না থাকায় অর্ধাহার-অনাহারে দিন কাটছে তাদের। জানা যায়, শহিদারসহ দুই মেয়ে ও এক ছেলে জন্মগতভাবে অন্ধ। শহিদারের স্ত্রী টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে হারান চোখের আলো। অর্থের অভাবে পরিবারটির কোনো সদস্যই অন্ধত্ব দূর করার চেষ্টাও করতে পারেনি। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হয়েও ২৮ বছর ধরে শহিদার রহমান চর সুভারকুটি গ্রামে একটি মসজিদে মুয়াজ্জিন হিসেবে কমর্রত ছিলেন। সেখানে মাত্র ২ হাজার টাকা বেতন পেতেন তিনি। এ দিয়ে কোনো মতে চলত পরিবারটি। অভাবের সংসারে হঠাৎ দেখা দেয় কালো মেঘ। চলতি বছরের মার্চ মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় হাঁটুতে আঘাত পান শহিদার। এরপর থেকে মসজিদে গিয়ে ঝাড়ু দিতে না পারায় তাকে চাকরিচ্যুত করে কমিটি। পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিসহ পাঁচজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হওয়ায় কলেজপড়ুয়া একমাত্র মেয়ের পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। শহিদার, তার স্ত্রী আসমা, মেয়ে শফিকা (১৯), শরিফা (১৪) এবং ছেলে মাসুম (১৬) দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। অন্য মেয়ে সাইয়েদা সিদ্দিকা সুস্থ ও স্বাভাবিক। তিনি কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। বড় মেয়ে ছাবেরা সিদ্দিকার বিয়ে হয়ে গেছে গত পাঁচ বছর আগে। স্থানীয়রা জানান, শহিদার রহমানের পরিবার অমানবিক জীবনযাপন করছে। সরকারি যেটুকু প্রতিবন্ধী ভাতা পান তা দিয়ে তার সংসার চলে না। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জানান, ওই পরিবারের যে মেয়েটি পড়ালেখা করছে তাকে সমাজসেবা অধিদফতরের চাকরি দিতে পারলে উপকার হবে। তাছাড়া স্বাস্থ্য বিভাগ যাতে তাদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা নেয় সে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

 

সর্বশেষ খবর