শনিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

পিঁয়াজ কেজিতে ৬-৮ টাকা কমেছে হিলিতে

হিলি প্রতিনিধি

পিঁয়াজের এলসি খোলা নিয়ে জটিলতা কেটে যাওয়ায় দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পিঁয়াজের আমদানি বেড়েছে। এতে চাহিদার তুলনায় পিঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় ও ক্রেতা সংকটের কারণে আমদানিকৃত ভারতীয় পিঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ৬ থেকে ৮ টাকা করে। পিঁয়াজের দাম কমায় খুশি বন্দরে পিঁয়াজ কিনতে আসা পাইকারসহ নিম্ন আয়ের মানুষ। হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বন্দর দিয়ে ইন্দোর জাতের পিঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে বন্দরে ইন্দোর জাতের ছোট আকারের পিঁয়াজ ২৯ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা দুই দিন আগে ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল। এ ছাড়া একই জাতের বড় আকারের পিঁয়াজ ৩০ থেকে ৩১ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ৩৮ থেকে ৩৯ টাকা বিক্রি হয়েছিল। হিলি স্থলবন্দরে পিঁয়াজ কিনতে আসা পাইকার আইয়ুব আলী বলেন, কয়েক দিন ধরেই পিঁয়াজের বাজার ওঠানামা করছিল। আজ এক দাম তো কাল আরেক দাম। প্রতিদিন পিঁয়াজের বাজার ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছিল। বন্দরে যেভাবে পিঁয়াজের দাম বাড়ছিল, সেই মোতাবেক মোকামে পিঁয়াজের দাম বাড়ছিল না। তাতে মোকামগুলোতে ব্যাপারীরা লোকসানের আশঙ্কায় পিঁয়াজ না কিনে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছিলেন। যার কারণে আমরাও বন্দর থেকে কোনো পিঁয়াজ ক্রয় করে মোকামে পাঠাতে পারিনি। এখন দাম কমায় নতুন করে পিঁয়াজের অর্ডার আসছে। আমরাও পিঁয়াজ কিনে মোকামে পাঠাচ্ছি। অপর পাইকার সিদ্দিক হোসেন বলেন, ব্যাংক নাকি পিঁয়াজের এলসি দিচ্ছিল না। যার কারণে বন্দর দিয়ে পিঁয়াজের আমদানি একেবারে কমে গিয়েছিল। এতে পিঁয়াজের দাম হু হু করে বাড়ছিল। মোকামে ক্রেতা সংকটের কারণে বেচাকেনা একেবারে ছিল না। বর্তমানে বন্দর দিয়ে পিঁয়াজের আমদানি বাড়ায় দাম কমে এসেছে। কিন্তু মোকামে এখনো সেভাবে চাহিদা তৈরি না হওয়ায় আমাদের ব্যবসা শুরু হয়নি। হিলি স্থলবন্দরের পিঁয়াজ আমদানিকারক হারুন উর রশীদ বলেন, ভারতের বেঙ্গালুরু অঞ্চলে বন্যা হওয়ার কারণে ভারতের বাজারেই পিঁয়াজের সরবরাহ কমে দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়ে গিয়েছিল। যার কারণে আমাদের বাড়তি দামে কিনতে হওয়ায় দেশের বাজারে পিঁয়াজের দাম বাড়তি ছিল। বর্তমানে ভারতের বাজারে পিঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কমতির দিকে রয়েছে। এ ছাড়া গত সপ্তাহে ডলার সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো কয়েক দিন পিঁয়াজের এলসি না খোলায় বন্দর দিয়ে পুরনো এলসির বিপরীতে অল্প পরিমাণে পিঁয়াজ আমদানি হচ্ছিল। বর্তমানে ব্যাংকগুলো শর্তসাপেক্ষে সীমিত পরিসরে এলসি দেওয়া শুরু করেছে। যার কারণে বন্দর দিয়ে পিঁয়াজের আমদানি কিছুটা বাড়ছে। ইতোমধ্যে পিঁয়াজের দাম খানিকটা কমতে শুরু করেছে। কিন্তু আমদানি বাড়লেও মোকামগুলোতে পিঁয়াজের তেমন কোনো চাহিদা না থাকায় কিছুটা ক্রেতা সংকটের অবস্থা বিরাজ করছে। এতে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বাড়ায় পিঁয়াজের দাম কমছে। সেই সঙ্গে দেশীয় পিঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়েছিল সেটিও কমতে শুরু করেছে মণপ্রতি ২ থেকে ৩০০ টাকা দাম কমেছে, যার প্রভাব আমদানিকৃত পিঁয়াজের দামের ওপর পড়ছে। হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, বন্দর দিয়ে পিঁয়াজের আমদানি অব্যাহত রয়েছে তবে আমদানির পরিমাণ আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। সপ্তাহের প্রথম দিকে বন্দর দিয়ে আমদানি কমে ১০ থেকে ১৫ ট্রাকে নামলেও সপ্তাহের শেষের দিকে আমদানির পরিমাণ বেড়ে ১৫ থেকে ২০ ট্রাকে দাঁড়িয়েছে। পিঁয়াজ কাঁচাপণ্য, এটি গরমে দ্রুত পচে নষ্ট হয়ে যায়। বন্দর কর্তৃপক্ষ কাঁচাপণ্যের জন্য সব সময় অগ্রাধিকার দিয়ে আলাদা স্ট্যাগসহ ওপেন ইয়ার্ড শেড করেছে। আলাদাভাবে শ্রমিক ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে। কাস্টমসের প্রক্রিয়া শেষে যেন দ্রুত এসব পণ্য বন্দর থেকে বের করে নিয়ে যেতে পারেন আমদানিকারকরা। এ জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে রেখেছে। বন্দর দিয়ে গত বৃহস্পতিবার ১৭টি ট্রাকে ৪৮১ টন পিঁয়াজ আমদানি হয়েছে। বন্দর দিয়ে গত ছয় কর্মদিবসে ৯৩টি ট্রাকে ২ হাজার ৪৫৮ টন পিঁয়াজ আমদানি হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর