শিরোনাম
সোমবার, ৭ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ডিলারের প্রতারণায় নিঃস্ব কয়েক শ কৃষক

রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

ডিলারের প্রতারণায় নিঃস্ব কয়েক শ কৃষক

ডিলারের প্রতারণায় ভুল জাতের ধানের বীজ বপন করে বিপাকে পড়েছেন পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর কয়েক শ কৃষক। আমনের মৌসুমে বপন করা এসব বীজে সময়ের আগেই গজিয়েছে ধানের শীষ। যা অপরিপক্ব হওয়ায় অধিকাংশতে ধরেছে চিটা। ফলন বিপর্যয়ে দিশাহারা কৃষক। ভুক্তভোগী কৃষকদের অভিযোগ, সাধারণ কৃষকের সরলতার সুযোগে ‘স্বর্ণ গোটা ও বিয়ার ১১’ জাতের বীজের কথা বলে বিদেশি জাতের ধানের বীজ ধরিয়ে দেন খুচরা ডিলাররা। আমনের মৌসুমে বপন করা এসব বীজে অসময়ে ধানের শীষ গজিয়েছে। এতে ধানের চেয়ে চিটাই বেশি। যেখানে প্রতি একর জমিতে ৪০-৫০ মণ ধান আসার কথা, সেখানে ১০-১৫ মণ ধান আসাই দুষ্কর। এতে বড় ধরনের ক্ষতি হবে তাদের। সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসবেন অনেকে। তাই দিশাহারা হয়ে পড়েছেন কৃষি নির্ভর প্রান্তিক জনপদের কৃষকরা। পূর্বনেতা গ্রামের ভুক্তভোগী কৃষক ইউনুস মৃধা জানান, তিনি এ বছর চার একর জমিতে আমনের আবাদ করেছেন। এর মধ্যে দুই একর জমিতে ডিলারের প্রতারণার কারণে ভুল বীজ বপন করেছেন। অসময়ে গজিয়েছে ধানের শীষ। অধিকাংশ শীষই অপরিপক্ব এবং চিটাযুক্ত। এতে কাক্সিক্ষত ফলন না পাওয়ার আশঙ্কা তার। একই গ্রামের কৃষক জাকির হোসেন জানান, নেতা বাজরের খুচরা ডিলার বাচ্চুর কাছ থেকে আমরা ধান এনেছি। আমরা তার কাছে স্বর্ণ গোটা ধান চেয়েছি। কিন্তু তিনি আমাদের দিয়েছেন লাল গুটি স্বর্ণা নামের একটি জাতের ধান। আমরা না বুঝেই ধানের বিজ বপন করেছি। এরপর এক মাসের মধ্যে ধানের শীষ বের হয়। যার অধিকাংশই চিটা। এতে আমাদের বড় ধরনের ক্ষতি হবে। এ বছর তেল ও সারের দাম বেশি থাকায় জমি আবাদে খরচ দিগুণ হয়েছে। এর মধ্যে আবার এ ধস! দিশাহারা হয়ে পথে বসার অবস্থা। প্রতারক ডিলারের শাস্তি হওয়া দরকার। ভুক্তভোগী কৃষক সাইমুন মিয়া জানান, বাহেরচর বাজারের খুচরা ডিলার এনায়েত ভাইর কাছ থেকে বিজ এনে খেতে লাগিয়েছি। বিক্রির সময় তিনি স্বর্ণ গোটা ধান বলছে। পরে ধানের শীষ বের হওয়ার পরে জানতে পারি ইন্ডিয়ান জাতের ধান। যে ধান বাংলাদেশে হওয়ার উপযোগী না। ভুল জাতের ধান গালানোর কারণে ধানের চেয়ে চিটার সংখ্যাই বেশি দেখা যাচ্ছে। তিন এর এক অংশ ফলনও পাওয়া যাবে না। রাঙ্গাবালী উপজেলা উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মিলন কুমার রায় জাুনান, এ ধরনের কোনো জাতের ধানের বীজ বাংলাদেশে উদ্ভাবন হয়নি। এটা ভারত থেকে চোরাই পথে আনা একটি জাত। বাংলাদেশের আবহাওয়ার সঙ্গে এটা ম্যাচিং হবে কি না তা  জানা নেই। কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর রাঙ্গাবালী উপজেলায় প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। এতে ১ লাখ ১৪ হাজার টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। তবে ফলন বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে অন্তত ২০০ একর জমির ফসল। এতে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় উৎপাদন কমে আসার শঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সর্বশেষ খবর