শুক্রবার, ১১ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ভাগ্য বদলাবে শেখ হাসিনা সড়ক

মোশাররফ হোসেন বেলাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ভাগ্য বদলাবে শেখ হাসিনা সড়ক

দ্রুত এগিয়ে চলছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-বিজয়নগর শেখ হাসিনা সড়কের নির্মাণ কাজ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

স্বপ্ন পূরণের হাতছানি দিচ্ছে হাওরের বুকে নির্মাণাধীন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-বিজয়নগর শেখ হাসিনা সড়ক। হাওরের স্বচ্ছ জলরাশি ভেদ করে এঁকেবেঁকে যাওয়া সড়কটির কাজ শেষ পর্যায়ে। এটি কেবল একটি সড়কই নয়, যেন পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর এগিয়ে যাওয়ার বার্তা। সড়কটি হওয়ায় জেলা সদরের সঙ্গে কম দূরত্বে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে সুবিধাবঞ্চিত বিজয়নগর উপজেলার। যার সরাসরি প্রভাব পড়বে ওই অঞ্চলের শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষিসহ আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে। বহু কাক্সিক্ষত সড়কটির নির্মাণ পুরোপুরি শেষ না হলেও এখন সুফল পেতে শুরু করেছে বিজয়নগর উপজেলার ১০ ইউনিয়নের আড়াই লাখ জনগোষ্ঠী। ইতোমধ্যে জেলা সদর ও বিজয়নগরের মানুষ হেঁটে ও সিএনজিচালিত অটোরিকশায় আসা-যাওয়া করতে পারছেন। এতে তাদের আর অন্য উপজেলার ওপর দিয়ে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে না। স্থানীয়রা দ্রুত অবশিষ্ট নির্মাণকাজ শেষ করে স্বপ্নের এ সড়ক পুরোপুরি চালুর দাবি জানিয়েছেন। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে এটি যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া সম্ভব হবে। সূত্র জানায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের সঙ্গে বিজয়নগর উপজেলার সরাসরি কোনো সংযোগ সড়ক নেই। প্রায় ৩৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে আখাউড়া অথবা সরাইল হয়ে জেলা সদরে আসতে হয়। এতে সময় লাগে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় পত্তন, সিঙ্গারবিল, চম্পকনগর, বিষ্ণুপুর ও পাহাড়পুর ইউনিয়নের বাসিন্দাদের। বর্ষাকালে হাওর পাড়ি দিয়ে জেলা শহরে আসতে তাদের একমাত্র ভরসা নৌকা। আর শুষ্ক মৌসুমে হাঁটা ছাড়া বিকল্প নেই। কয়েক দশক ধরে বিজয়নগরবাসী দাবি জানিয়ে আসছিলেন হাওরের বুকে সড়ক নির্মাণের। কিন্তু হাওরে সড়ক নির্মাণ অনেকটা চ্যালেঞ্জ ছিল সংশ্লিষ্টদের জন্য। অবশেষে সব বাধা ডিঙিয়ে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের শিরাইলকান্দি থেকে বিজয়নগরের পত্তন ইউনিয়নের সিমনা পর্যন্ত সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়। নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১৩৫ কোটি টাকা। নামকরণ করা হয়েছে শেখ হাসিনা সড়ক। বর্ষাকালে ভাঙন রোধে সড়কের পাশে বসানো হয়েছে সিসি ব্লক। সড়কের তিনটি সেতুর সবকটির কাজ শেষ। অ্যাপ্রোচ সড়কের কাজ শেষ করে শুরু হবে কার্পেটিং। এরপর খুলে দেওয়া হবে স্বপ্নের শেখ হাসিনা সড়ক। সড়কটি হওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের কষ্টের অবসান ঘটবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে আসবে আমূল পরিবর্তন। এলজিইডি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী এ টি এম রবিউল আলম বলেন, দু-এক মাসের মধ্যে কাজ শেষ করে জানুয়ারি নাগাদ চলাচলের জন্য পুরোপুরি উন্মুক্ত করে দেওয়া সম্ভব হবে সড়ক।

সর্বশেষ খবর