নতুন ইট উৎপাদন নিয়ে বিপাকে পড়ছেন সৈয়দপুর উপজেলার ভাটা মালিকরা। কয়লা সংকট ও মূল্য বৃদ্ধির কারণে ভাটায় ইট পোড়ানো শুরু করতে পারছেন না তারা। নতুন ইট উৎপাদন না হওয়ায় মজুদ ইটের দামও বেড়েছে। বেসরকারি আবাসন খাতসহ সরকারি উন্নয়ন কাজে দেখা দিয়েছে ধীরগতি। স্থানীয় ভাটা মালিকদের সূত্রে জানা যায়, সৈয়দপুর উপজেলায় ছোট বড় মিলিয়ে ২৮টি ইটভাটা রয়েছে। নতুন উৎপাদন মৌসুম শুরু হলেও ভাটায় ইট পোড়ানো শুরু হয়নি। এলসি বন্ধ থাকায় ভারত থেকে কয়লা আমদানি পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। ফলে আমদানিকারকরা মজুদ কয়লার অস্বাভাবিক দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। বর্তমানে প্রতি টন কয়লা মানভেদে ২৫-২৮ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত বছর প্রতি টন কয়লার দাম ছিল ১৮ হাজার টাকা। কয়লা সংকট ও অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিসহ পরিবহন খরচ মিলিয়ে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করতে হিমশিম খাচ্ছেন ভাটা মালিকরা। কাঁচা ইট তৈরি করেও পোড়াতে পারছেন না তারা। অল্পসংখ্যক ভাটা ঝুঁকি নিয়ে ইট পোড়ানোর প্রস্তুতি নিয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটা ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা কাঁচা ইট তৈরিতে ব্যস্ত। সারি সারি ইট শুকিয়ে স্তূপ করে রাখা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে পোড়ানোর কাজ। বাংলাদেশ ইটভাটা মালিক সমিতির নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর-রশিদ জানান, নতুন ইট উৎপাদনের মৌসুম শুরু হয় সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে। এ সময় থেকে কাঁচা ইট তৈরি করা হয়। এ ইট রোদে শুকিয়ে অক্টোবর মাসে শুরু হয় প্রথম রাউন্ডের পোড়ানো। একটি ভাটায় প্রতি মৌসুমে ছয় রাউন্ড ইট পোড়ানো যায়। প্রতি রাউন্ড ইট প্রস্তুত করতে সময় লাগে ১৫-২০ দিন। চলতি মৌসুমে কয়লা সংকট ও মূল্য বৃদ্ধির কারণে মোটা অঙ্কের পুঁজি বিনিয়োগ করতে হচ্ছে। বিপুল অর্থ জোগাড় করতে গিয়ে দেরি হচ্ছে ইট পোড়ানো। নভেম্বর মাস শুরুর পরও ইট উৎপাদন করা যায়নি। এ অবস্থায় চলতি মৌসুমে ছয় রাউন্ড ইট পোড়ানো সম্ভব হবে না। এই ভাটা মালিকের মতে, কয়লাসহ সব উপকরণের দাম বৃদ্ধিতে বিপুল পুঁজি বিনিয়োগ করতে হচ্ছে। এমন আর্থিক সংগতি সব ভাটা মালিকের নেই। ফলে উপজেলার ২৮টি ভাটার অর্ধেকই চালু করা সম্ভব হবে না।