শনিবার, ১২ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ইউপি চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

ঘাটাইল উপজেলার সাগরদিঘী ইউপি চেয়ারম্যান হেকমত সিকদারের অপসারণ দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই ইউপির আটজন সদস্য। গতকাল দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সাগরদিঘী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ওয়াজেদ আলী ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ফরহাদ আলী সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তারা জানান, ইউপি চেয়ারম্যান হেকমত সিকদারের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, অর্থ আত্মসাৎ, অনিয়ম-দুর্নীতি ও ইউপি সদস্যদের লাঞ্ছিত করার একাধিক অভিযোগ ঘাটাইল উপজেলা ও টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং বিভিন্ন দফতরে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ঘাটাইল উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগেরই তদন্ত করা হয়নি। দু-একটি দফতরের পক্ষ থেকে তদন্তের নামে হেকমত সিকদারের বাড়ি গিয়ে বাগানের ফলমূল নিয়ে চলে এসে বলা হয়েছে সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। বাধ্য হয়ে তারা বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের কাছে ইউপি চেয়ারম্যানের অপসারণ চেয়ে আবেদন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম, খলিলুর রহমান, ফাতেমাতুজ জোহরা মুনমুন উপস্থিত ছিলেন।

অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান হেকমত সিকদার মোবাইল ফোনে জানান, সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়েছে। সাগরদিঘী ইউনিয়নের সব প্রকল্প ইউপি সদস্যরা বাস্তবায়ন করেন। একটি মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তার নামে অপপ্রচার চালাচ্ছে। টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি জানান, সাগরদিঘী ইউপি চেয়ারম্যানের বিষয়ে তিনি একটি চিঠি পেয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে আরও জানানো হয়- চেয়ারম্যান হেকমত সিকদার নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম সভায় সদস্যদের স্বাক্ষর নিয়ে তাদের অজান্তে পছন্দের সদস্যকে প্যানেল চেয়ারম্যান মনোনীত করেন। মাসিক ও উন্নয়ন সভায় সদস্যদের স্বাক্ষর নিয়ে তার ইচ্ছামতো পরিষদের রেজুলেশন করেন। পরিষদের আয়-ব্যয়ের হিসাব সভায় উপস্থাপন না করে ইচ্ছামতো কার্য সম্পন্ন করেন। প্রকল্পের নামে প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেক ইউপি সদস্যের থেকে ১ লাখ করে টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। টাকা ফেরত চাইলে ও তার বিরুদ্ধে কথা বললে তিনি ভয় দেখান, হুমকিধমকি দেন।

অভিযোগে বলা হয়- টিআর, কাবিখা ও এলজিএসপি প্রকল্পের নামমাত্র সভাপতি দিয়ে নিজেই প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেন। ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচির কাজ না করেই প্রায় ১৪ লাখ টাকা ইউপি সদস্যদের ছেলে, মেয়ে, ভাই ও পরিবারের অন্যদের নামে বিকাশ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন। চেয়ারম্যান ইউপি সদস্যদের মতামত উপেক্ষা করে নিজ ইচ্ছামতো বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী, মাতৃত্বকালীনসহ বিভিন্ন ভাতা এবং টিউবওয়েল, সেলাই মেশিন, সোলার প্যানেল, হুইল চেয়ার ও কৃষি উপকরণ এবং ভিজিডি কার্ড স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে হস্তান্তর করেন। বতর্মান সময় পর্যন্ত এডিপি ননকস্ট ও ১ শতাংশ প্রকল্পগুলোর কোনো কাজ না করে পুরো টাকা আত্মসাৎ করেছেন। বিভিন্ন গাছ বিক্রির মাধ্যমে ৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন অথচ ইউপি সদস্যদের সম্মানি ভাতা আজ পর্যন্ত প্রদান করেননি। ইউপি সদস্যরা এসব অভিযোগের নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অবিলম্বে চেয়ারম্যান হেকমত সিকদারের অপসারণসহ শাস্তির দাবি জানান।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর