শিরোনাম
সোমবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

কুমিল্লায় প্রাথমিক শিক্ষায় কমছে মান, ঝরছে শিক্ষার্থী

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

কুমিল্লায় প্রাথমিক শিক্ষায় কমছে মান, ঝরছে শিক্ষার্থী

কুমিল্লা জেলায় প্রাথমিক শিক্ষায় মান কমছে বলে অভিযোগ অভিভাবকদের। এতে প্রতি বছর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে কমছে শিক্ষার্থী। এতে চিন্তিত কুমিল্লার শিক্ষা কর্মকর্তারা। এদিকে সচেতনরা মনে করছেন, শিক্ষার মান কমে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা কিন্ডারগার্টেনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চলে যাচ্ছে। সূত্রমতে, জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২ হাজার ১০৭টি। ২০২০ সালে কুমিল্লা জেলায় শিক্ষার্থী ছিল ৯ লাখ ৬৩ হাজার ৫৫২ জন। তা ২০২১ সালে দাঁড়ায় ৮ লাখ ৮১ হাজার ৪৩৯ জনে। ২০২২ সালে তা কমে এসে দাঁড়ায় ৮ লাখ ৭৫ হাজার ১৪৮ জনে। সরেজমিনে কুমিল্লা নগরীর ও কয়েকটি উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, কিছু শিক্ষক সময় মতো আসেন না। কিছু স্কুলে শিক্ষকরা ঘুমাচ্ছেন। কেউ ব্যস্ত মাথার উকুন খোলায়। আর কেউ আছেন নিজেদের সন্তান পরিচর্যায়। শিক্ষার্থীরা নিজের মতো ছোটাছুটি করছে। সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিয়ারা ইউনিয়নের এক অভিভাবক বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থায় কোনো শৃঙ্খলা নেই। শিশু শ্রেণিতে অঙ্ক শেখায়। পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বর্ণমালা পড়ায়। কিছু শিক্ষক হয়তো মনে করেন, সরকারি স্কুলে যারা পড়ে সবাই গরিব-মিসকিনের সন্তান। তাই তাদের দরদ দিয়ে পড়ানোর দরকার নেই। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া আমার সন্তান এসে বলে, বই না পড়িয়ে অ-আ পড়ায়। তাই ছেলেকে কিন্ডারগার্টেনে নিয়ে এসেছি। চৌদ্দগ্রাম উপজেলার এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জসিমউদ্দিন বলেন, আমরা সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে নিশ্চিত থাকি যে, শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে লেখাপড়া শিখিয়ে থাকেন। কিন্তু বছর শেষে ফলাফল দেখলে তেমনটা প্রতিয়মান হয় না। নগরীর এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, শিক্ষকদের মধ্যে কিছু ফাঁকিবাজি করেন। তবে অধিকাংশ আন্তরিক। শিক্ষকদের বিভিন্ন জরিপে ব্যস্ত না রাখলে তারা পাঠদানে আরও বেশি মনোনিবেশ করতে পারবেন। এতে শিক্ষার মান আরও বাড়বে। লাকসাম উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, শিক্ষার্থী কমে যাওয়া ও মান বাড়ানো নিয়ে আমরা কাজ করছি। এ নিয়ে আমাদের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মহোদয় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। আশা করছি কুমিল্লার ঝিমিয়ে পড়া শিক্ষা ব্যবস্থায় নতুন গতি আসবে। কুমিল্লা নগরীর মনোহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি সালেহা আক্তার বলেন, আমাদের কিছু ঘাটতি আছে। সেটি পূরণে শিক্ষকদের পাঠদান বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মহোদয়। এটি একটি ভালো উদ্যোগ বলে মনে করি।

সর্বশেষ খবর