বৃহস্পতিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

চরসোনারামপুরে ভাঙন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

চরসোনারামপুরে ভাঙন

হঠাৎ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের চরসোনারামপুরে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। গত কয়েক দিনে বিলীন হয়ে গেছে ৬টি বসতঘরসহ গৃহস্থালিসহ অন্যান্য স্থাপনা, হুমকিতে রয়েছে আরও অন্তত ৮-১০টি বাড়িঘর। বৈদ্যুতিক খুঁটি ধসে পড়ায় সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে দেওয়া বিদ্যুৎ সংযোগও রয়েছে বিচ্ছিন্ন। ভাঙনের কবলে পড়েছে চরের মধ্যে থাকা আশুগঞ্জ-সিরাজগঞ্জ বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের রিভারক্রসিং টাওয়ারের দুই পাশ। ঢেউয়ের তোড়ে টাওয়ারের নিরাপত্তায় দেওয়া উত্তর ও পূর্ব পাশের সিমেন্টের ব্লক নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। দুই পাশের অন্তত ১৫ ফুটের বেশি এলাকা নদীতে তলিয়ে গেছে। ভাঙন এখনো অব্যাহত থাকায় চরের মানুষ আতঙ্কে রয়েছে। স্থানীয়দের মতে, প্রতি বছর নদী ভাঙন হলেও একদিনের ভাঙন গত তিন বছরের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ক্ষতি হয়েছে। তারা দ্রুত ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় পুরো চরটি বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ সরেজমিনে চর ও টাওয়ার এলাকা পরিদর্শন করেছে। চরবাসী জানায়, সিত্রাংয়ের পরবর্তীতে চরের লোকনাথপাড়া ও মধ্যপাড়ায় এলাকার বিভিন্ন অংশে বিশেষ করে চরের পূর্ব ও উত্তর পাশে ভাঙন শুরু হয়। রেবতী দাস, নগেন্দ্র দাস, রাসু দাস, উপেন্দ্র দাস ও বিধবা বিনা রানি দাসের একটি করে বসতঘর, ল্যাট্রিন, টিউবওয়েল নদীতে বিলীন হয়ে যায়। এছাড়া আশেপাশের আরও অন্তত ৮-১০টি ঘর নদী ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে। চরের মধ্যপাড়ায় শ্মশান এলাকায় ব্যাপক ভাঙন হয়েছে। বেশ কয়েকটি গাছ ও একটি বাড়ির নিরাপত্তা দেয়াল ভেঙে নদীতে তলিয়ে গেছে। এদিকে চরের লোকনাথপাড়ার পূর্ব পাশে রয়েছে আশুগঞ্জ-সিরাজগঞ্জ বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের রিভারক্রসিং টাওয়ার। টাওয়ার রক্ষায় তিন পাশে যে সিমেন্টের ব্লক ও বালিভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে প্রচণ্ড ঢেউয়ের তোড়ে উত্তর ও পূর্ব পাশের এসব ব্লক ও জিও ব্যাগ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনে টাওয়ার এলাকার দুই পাশের প্রায় ১০-১৫ ফুট এলাকা তলিয়ে গেছে। এখনো ভাঙন অব্যাহত। চরসোনারামপুর এলাকার সুভাস চন্দ্র দাস জানায়, চরে প্রতিবছর কম-বেশি ভাঙন হয়। কয়েক দিন যে পরিমাণ ভাঙন হয়েছে তা গত তিন বছরেও হয়নি। এখনো ভাঙছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে চরে আর থাকা সম্ভব হবে না বলে তিনি আশঙ্কা করেন। বিজয় চন্দ্র দাস ও জোতিন্দ্র দাস বলেন, একদিনে টাওয়ার এলাকার বেড়িবাঁধ শেষ হয়েছে। ভাঙনে অন্তত ৩০ ফুট এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে বলে তারা জানান। সুমতি রানি ও বিনা রানি বলেন, চোখের সামনে ঘর নদীতে ডুবে গেছে। আমাদের সরকার সহায়তা না করলে বাঁচতে পারব না। পানি উন্নয়ন বোর্ড ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মঞ্জুর রহমান বলেন, সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর