মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

তিস্তার পরিত্যক্ত চরে উৎপাদন হবে ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ

প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন ডিসেম্বরে

নজরুল মৃধা, রংপুর

তিস্তার পরিত্যক্ত চরে উৎপাদন হবে ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ

রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে তিস্তা নদী। এই নদীতে জেগে উঠেছে অসংখ্য চর। তিন জেলার চরের পরিত্যক্ত জমিতে গড়ে উঠেছে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প তিস্তা সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট। এখানে প্রতিদিন ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে এই বিদ্যুৎ গিয়ে রংপুর ও মিঠাপুকুর সাব স্টেশনে যুক্ত হবে। এর সুফল পাবে রংপুরসহ গোটা উত্তরাঞ্চলের মানুষ। আসছে ডিসেম্বর এই সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। এটি চালু হলে পাল্টে যাবে উত্তরের অর্থনীতি। সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থান। পাওয়ার প্ল্যান্ট ও বিদ্যুৎ-সংশ্লিষ্ট কর্মকতা সূত্রে জানা গেছে, তিস্তা নদীর রংপুরের পীরগাছা, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ ও কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলা সীমান্ত এলাকায় এই পাওয়ার প্ল্যান্ট গড়ে উঠেছে। চরে পড়ে থাকা ৬৫০ একর জমিতে ২০১৭ সালে তিস্তা পাওয়ার প্ল্যান্ট বাস্তবায়ন কাজ শুরু করে বেক্সিমকো পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড। ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রে আছে ৮৫টি মাউন্টিং পাইলস। যার ওপর বসানো হয়েছে প্রায় ৫ লাখ ৬০ হাজার সৌর প্যানেল। এসব প্যানেল থেকে ১২০টি ইনভার্টারের মাধ্যমে প্রতিদিন ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে। এ জন্য ২৮টি বক্স ট্রান্সমিশনে সংযোগ স্থাপন, সাবস্টেশনসহ ১২০ কেভিএ ট্রান্সমিশন টাওয়ার নির্মাণ এবং জাতীয় গ্রিডে সংযুক্তির জন্য তিস্তা পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে রংপুর পর্যন্ত তৈরি হয়েছে ৩৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন। ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে সঞ্চালন লাইনের কাজ। এ লাইনের মাধ্যমে সুন্দরগঞ্জ থেকে রংপুর গ্রিড সাবস্টেশনে বিদ্যুৎ সরবরাহ হবে। প্রকল্পটি চালু হলে কর্মসংস্থান হবে কমপক্ষে আড়াই হাজার লোকের। সূত্র মতে, এটি দেশের বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প। এর মাধ্যমে রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, লালমনিরহাটসহ রংপুর বিভাগের বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ হবে। দূর হবে এই অঞ্চলের লোডশেডিং। শিল্প-কলকারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্যে ও কৃষিকাজে বিপ্লব ঘটবে। প্রকল্পের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইউনুছ আলী বলেন, কাজ শেষের পথে। ডিসেম্বরে প্রকল্প উদ্বাধন হলে এ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের উপকার হবে। নেসকোর চিফ ইঞ্জিনিয়ার শাহাদৎ হোসেন বলেন, এই পাওয়ার প্ল্যান্টে উৎপাদিত বিদ্যুৎ রংপুর-মিঠাপুকুর গ্রিডে যুক্ত হবে। উৎপাদন বাড়বে শিল্প-কলকারখানায়। রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) হরেন্দ্র নাথ বর্মণ বলেন, তিস্তা পাওয়ার প্ল্যান্টে উৎপাদিত বিদ্যুৎ প্রথমে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়ে মিঠাপুকুর ও রংপুর সাব স্টেশনে যাবে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। এটি চালু হলে এই অঞ্চলে উন্নয়নের দ্বার উন্মোচন হবে।

সর্বশেষ খবর