বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

পরিত্যক্ত ট্যাংকি ব্যবহারে লাভবান কৃষক

সরকার হায়দার, পঞ্চগড়

পরিত্যক্ত ট্যাংকি ব্যবহারে লাভবান কৃষক

গভীর নলকূপের পরিত্যক্ত ট্যাংকি ব্যবহার করে স্প্রিংকলার পদ্ধতিতে সেচ কার্যক্রম শুরু করেছে পঞ্চগড় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। পরিত্যক্ত ২৪টি ট্যাংকির মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে দুটি ব্যবহার করে সফলতা এসেছে। চাষিরা বলছেন, এ পদ্ধতিতে সেচ খরচ কম। ২০০৫-২০০৮ সালে পঞ্চগড়ের প্রত্যন্ত গ্রামে সুপেয় পানি সরবরাহের উদ্যোগ নেয় সরকার। হাইজিন ওয়াটার অ্যান্ড স্যানিটেশন প্রকল্পের আওতায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে জেলার পাঁচ উপজেলায় ২৪টি গভীর নলকূপের সঙ্গে ট্যাংকি স্থাপনে পানি সরবরাহ শুরু করে। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাওয়ার পর গ্রামীণ লোকজন নিজস্ব উদ্যোগে মোটরের সাহায্যে পানি উত্তোলন শুরু করে। পরে ট্যাংকগুলো পরিত্যক্ত হয়ে যায়। পরিত্যক্ত এ ট্যাংক কাজে লাগানোর উদ্যোগ নেয় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। এ পদ্ধতিতে প্রথমে গভীর নলকূপের মাধ্যমে ট্যাংকিতে পানি উত্তোলন করা হয়। মাত্র ১৫ মিনিটে ২৫ হাজার লিটার পানি উত্তোলন করা যায়। পরে স্প্রিংকলার মাধ্যমে চাষিদের আবাদি জমিতে ট্যাংকির জমা পানি সেচ দেওয়া হয়। শুরুতেই তারা তেঁতুলিয়া উপজেলার ক্ষুদ্র চা চাষিদের বাগানে সেচ কার্যক্রম শুরু করে। এ উদ্যোগে চাষিদের সেচ খরচ বহুগুণ কমেছে। তারা বলছেন, চা গাছের পাতায় পানি দেওয়ার নিয়ম থাকলেও আগে সারফেজ ইরিগেশনের মাধ্যমে গোড়ায় পানি দিতে হতো। ফলে গাছ মরে যাওয়ার পাশাপাশি উৎপাদন অনেক কম হতো। সময় লাগত বেশি। আগে এক বিঘা জমিতে পানি সেচ দিতে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা খরচ হতো। ট্যাংকির মাধ্যমে স্প্রিংকলা পদ্ধতিতে পানি দেওয়ার ফলে বিঘায় খরচ হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। সময়ও কম লাগছে। তেঁতুলিয়া উপজেলার আজিজ নগর গ্রামের চা চাষি সাজ্জাদুর রহমান রিপন জানান, এ পদ্ধতিতে প্রায় সাত একর চা বাগানে সেচ দিচ্ছেন তিনি। তিনি বলেন, সেচ দিতে আগে একরে একবার পানি দিতে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা খরচ হতো। এখন খরচ হয় মাত্র ৫০ থেকে ৭০ টাকা। এ পদ্ধতিতে পানি দেওয়ার ফলে বিপুল সাশ্রয় হচ্ছে। চা পাতার উৎপাদনও ভালো হচ্ছে। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সহকারী মেকানিক মোতাহার হোসেন জানান, ট্যাংকগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। এতে সরকারের অনেক টাকা কাজেই আসছিল না। এক বছর ধরে চাষিদের সঙ্গে পরামর্শ করে এ পরিত্যক্ত ট্যাংক চালু করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, পঞ্চগড়ে পরিত্যক্ত ২৪টি গভীর নলকূপের ট্যাংকগুলো কাজে লাগানোর উদ্যোগ নিচ্ছেন তারা।

সর্বশেষ খবর