মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন মৃৎশিল্পীরা

নাটোর প্রতিনিধি

ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন মৃৎশিল্পীরা

নাটোরের সিংড়া উপজেলার শেরকোলের কুমারপাড়া মৃৎশিল্প গ্রাম হিসেবে পরিচিত। আদিকাল থেকে এ গ্রামের অর্ধশতাধিক লোক মাটির পণ্য তৈরি ও বেচাকেনা করতেন। তখনকার লোকজন বাড়ির নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী হিসেবে ব্যবহার করতেন মাটির তৈজসপত্র। আধুনিকতার ছোঁয়ায় মৃৎশিল্প এখন বিলুপ্তির পথে। তবু বাপ-দাদার পেশা ধরে রেখেছেন কুমারপাড়ার অনেকে। এ গ্রামের বেশির ভাগ লোক মৃৎশিল্পের ওপর নির্ভরশীল। সরেজমিন দেখা যায়, বাড়ির উঠানে হাঁড়ি-পাতিল তৈরি করছেন কুমাররা। নারীরা এ কাজে সহযোগিতা করছেন। যারা এখনো পেশাটি ধরে রেখেছেন তাদের মধ্যে আছেন, নরেশ, সিরিশ, নিরঞ্জন, মনোরঞ্জন, মদন পাল, দিশা রানি, নব কুমার, বিসনো কুমার, সত্যন কুমার, শ্রীকান্ত, সুদিপ কুমার ও কাঞ্চন পাল। তারা জানান, সমাজে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগায় এ শিল্প আজ ধ্বংসের পথে।

এক সময়ে মাটির পণ্যের বেশ চাহিদা ছিল গ্রামেগঞ্জে। এখন চাহিদা নেই বললেই চলে। ফলে এ পেশায় থেকে সংসার চালানো খুব কঠিন হয়ে পড়ছে। কয়েকজন মৃৎশিল্পী বলেন, ইতিহাস-ঐতিহ্যের প্রতীক মৃৎশিল্প। সময়ের জাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে হারিয়ে যেতে বসেছে এ শিল্প। এর স্থান দখল করেছে প্লাস্টিক, স্টিল ও মেলামাইন সামগ্রী। নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে আমাদের কুমার সম্প্রদায় বংশ পরম্পরায় এ শিল্প আজও টিকিয়ে রেখেছেন। রান্নার হাঁড়ি ও গৃহস্থালির নানা কাজে ব্যবহার হতো মাটির পণ্য। বিভিন্ন সৌখিন সামগ্রী হিসেবে ঘরে শোভা পেত মাটির তৈরি মনোমুগ্ধকর শোপিস। বর্তমানে প্লাস্টিক, সিরামিকের প্রতিযোগিতার বাজারে মৃৎশিল্প হারাতে বসেছে। শিল্পীরা সরকারি ও বেসরকারি সেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেন। প্রকৃত উদ্যোক্তা হিসেবে স্বীকৃতির দাবি জানান তারা। সহযোগিতা পেলেই এ শিল্প বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব বলে দাবি তাদের।

সর্বশেষ খবর