রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

সেই বাকপ্রতিবন্ধী ফিরে পেল স্বজনদের

ভাঙ্গা প্রতিনিধি

প্রায় পাঁচ মাস ধরে ভাঙ্গায় অবস্থানকারী বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী ফিরে পেল তার স্বজনদের। জাতীয় পরিচয়পত্র ও স্বজনদের বর্ণনানুযায়ী তার নাম জসীম উদ্দিন কিরণ (৫০)। তিনি নোয়াখালী জেলার সোনাইমুরী উপজেলার সোনাপুর গ্রামের মৃত সামচুল হকের ছেলে। গত শুক্রবার ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জিয়ারুল ইসলাম ওই প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে তার ভাই শহিদুল ইসলামের হাতে তুলে দেন। এ সময় ভাঙ্গা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেলাল উদ্দিন ভূইয়া উপস্থিত ছিলেন। ভাঙ্গা বাজারের ব্যবসায়ী ফারুক মোল্লা জানান, গত ৪/৫ মাস ধরে এই প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে ভাঙ্গা বাজারের বণিক সমিতির কার্যালয়সংলগ্ন নিরিবিলি হোটেলের সামনে দেখা যায়। তিনি কথা বলতে পারতেন না। ভাঙ্গা বাজারের ব্যবসায়ী মহিদুল ইসলাম বলেন, ওই ব্যক্তিকে আমি কয়েক মাস ধরে খাবারের ব্যবস্থা করেছি। কথা না বলতে পারলেও তার অনুভূতি শক্তি ছিল। তার ইশারা ইঙ্গিতে বাড়ি ফেরার আকুতি ছিল। আমরা এক পর্যায়ে তাকে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জিয়ারুল ইসলামের কাছে নিয়ে যাই। ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়ারুল ইসলাম বলেন, লোকটির বড় আকুতি ছিল পরিবারের কাছে ফেরার। আমরাও ওনার ভাষা বুঝতে পারিনি।

উনি কান্নাকাটি করতেন। এলাকার রাস্তার ছবি এঁকে দেখাতেন, ইশারায় বোঝানোর চেষ্টা করতেন। উনি পড়া লেখা জানেন না। শুধু  নিজের নাম ‘কিরণ’ লিখতে পারতেন। আমি জেলা নির্বাচন অফিসে ওনার ফিঙ্গার নিয়ে ঠিকানা খোঁজার চেষ্টা করি। কিন্তু ফিঙ্গারিংয়ে কোনো ফলাফল আসছিল না। গত ২ ডিসেম্বর ও ২১ ডিসেম্বর আমার ফেসবুকে ওই ব্যক্তিকে নিয়ে পোস্ট দেই। পোস্টটি বিভিন্ন ব্যক্তি শেয়ার করেন। পরে ফেসবুকে দেখে ওনার ছোট ভাই শহিদুল ইসলাম ২৩ ডিসেম্বর ভাঙ্গা থানায় আসেন। আমাদের বিস্তারিত জানান। জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে ও খোঁজ নিয়ে ভাইয়ের হাতে তাকে তুলে দেই। ভাঙ্গা থানার এক পুলিশ সদস্য জানায়, ভাইকে পেয়ে দুই ভাইয়ের এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বার বার ইশারায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছিলেন। 

সর্বশেষ খবর