শিরোনাম
রবিবার, ১ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

বেহাল লক্ষ্মীপুর বিসিক শিল্পনগরী

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

বেহাল লক্ষ্মীপুর বিসিক শিল্পনগরী

লক্ষ্মীপুরের বিসিক এলাকা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাব, বেহাল সড়কসহ নানা অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনার কারণে মুখ থুবড়ে পড়েছে লক্ষ্মীপুর বিসিক শিল্পনগরী। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে নিরাপত্তাহীনতা, চাঁদাবাজি, বহিরাগতদের নগ্ন হস্তক্ষেপ। এসব সমস্যায় চরম দুর্ভোগ আর আতঙ্ক পোহাচ্ছেন বিসিকের ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘদিনের সমস্যার কারণে বড় বিনিয়োগে আগ্রহ হারাচ্ছেন অনেকেই। বিসিক কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে দায়ী করে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে সরকারের সহায়তার দাবি এখন উদ্যোক্তাদের। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সমস্যা সমাধানে কাজ করছে বিসিক। জানা যায়, বেকার সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালে লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের বাঞ্চানগর এলাকায় ১৬ দশমিক ৭ একর জমির ওপর বিসিক শিল্পনগরী প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয়। প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০০৪ সালে কাজ সম্পন্ন করে গড়ে ওঠে বিসিক শিল্পনগরী। এরপর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলার সঙ্গে লক্ষ্মীপুরের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকায় ক্রমেই আগ্রহ বাড়ছে শিল্প উদ্যোক্তাদের। বেশ কয়েকটি বড় কোম্পানি উৎপাদন কার্যক্রমও শুরু করেছে। সেগুলোর মধ্যে নেক্সট ফুট, বেকারি, অয়েল মিল, জৈব সারের কারখানা, সয়াবিন প্রক্রিয়াজাতকরণ, অটো রাইস মিল, মবিল রি-প্যাকিং ফ্যাক্টরিসহ চালু রয়েছে ৩৬টি শিল্প প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া নির্মাণাধীন রয়েছে ১১টি শিল্প প্রতিষ্ঠান। রাস্তাঘাট খারাপ থাকার কারণে বেড়েছে পরিবহন ব্যয়। এ ছাড়া ট্রাক মালিক সমিতির নামে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা দিতে হয় চাঁদা। প্রতি বছর সার্ভিস চার্জ নিলেও উদ্যোক্তাদের জন্য আশানুরূপ কোনো সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করছে না বিসিক কর্তৃপক্ষ। সন্ধ্যার পর মাদকসেবীদের অভয়ারণ্য পরিণত হয় গোটা বিসিক শিল্প এলাকা। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বিসিক এলাকার মালিক-শ্রমিকরা। বিসিক মালিক সমিতির সভাপতি বেলায়েত হোসেন বেলাল বলেন, নানা সমস্যায় সম্প্রতি বন্ধ হয়ে গেছে বেশ কিছু শিল্প প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া সীমানাপ্রাচীর না থাকায় বর্তমানে গরু-ছাগল আর মাদকসেবীদের বিচরণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে পুরো শিল্প এলাকা। এ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ করেন বিসিক মালিক সমিতির নেতা। কয়েকজন শিল্পোদ্যোক্তা বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সঙ্গে লক্ষ্মীপুরের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতি হওয়ায় জেলার বিসিক শিল্প নগরী নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে শিল্পোদ্যোক্তাদের। তবে পরিবহন চাঁদাবাজি, ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাব, বেহাল সড়ক ও বহিরাগতদের নগ্ন হস্তক্ষেপে আস্থা হারাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। বিসিক কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও অনিয়মকে দায়ী করে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে সরকারের সহায়তার দাবি তাদের।  লক্ষ্মীপুর বিসিক শিল্পনগরীর উপ-ব্যবস্থাপক মো. মাকছুদুর রহমান বলেন, ৫৬টি ইউনিটের অনুকূলে ৯৯টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ৩৬টি ইউনিট চালু রয়েছে। অবশিষ্ট শিল্প ইউনিটগুলো পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হলে এখানে ৫ হাজার লোকের নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। তবে বহিরাগতদের আড্ডার বিষয়ে কোনো উদ্যোক্তা অভিযোগ করেননি। ট্রাক থেকে চাঁদা আদায়ের বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি, তার তদন্ত চলছে। এ ছাড়া সড়ক এবং ড্রেনেজ সমস্যা সমাধানে কাজ করছে বিসিক।

সর্বশেষ খবর