রবিবার, ১ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

লালমনিরহাটে রেললাইনের পাথর উধাও, ঝুঁকি নিয়ে চলছে ট্রেন

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

লালমনিরহাটে রেললাইনের পাথর উধাও, ঝুঁকি নিয়ে চলছে ট্রেন

বেহাল লালমনিরহাট-বুড়িমারী রেল রুট -বাংলাদেশ প্রতিদিন

লালমনিরহাট-বুড়িমারী রুটে রেললাইনের পাথর উধাও হয়ে গেছে। এতে  ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে ট্রেন। যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন খোদ রেল বিভাগের কর্তা ব্যক্তিরা। অন্যদিকে এ রুটের বুড়িমারী স্টেশন থেকে বুড়িমারী জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার রেলপথ বেদখল হয়ে গেছে। রেললাইন, ফিশপ্লেট ও স্লিপার উপড়ে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা । পুরো ৯০ কিলোমিটার এই রেললাইনজুড়ে দুর্বৃত্তদের এমন কাজের পরও নির্বিকার রেল বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। তারা এসব অপকর্ম দেখেও না দেখার ভান করে বসে আছে। লালমনিরহাট রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, ১৮৯৮-৯৯ সালে ‘ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে’ নামে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার লালমনিরহাট-বুড়িমারী-ভারতের আসাম প্রদেশ পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন করে। সময়ের পরিবর্তনে এ রুটে দেশ স্বাধীনের পর বুড়িমারী-আসাম পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘদিন এ রুট সংস্কার কার্যক্রম না হওয়ায় লালমনিরহাট-বুড়িমারী স্থলবন্দর পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটার রেলপথ ট্রেন চলাচলের জন্য অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ফলে ছয় জোড়া ট্রেনের মধ্যে পাঁচ জোড়া ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। শুধু এক জোড়া ট্রেন চলাচল করত। ওই সময়ে এ রুটে ট্রেন লাইনচ্যুতির খবর ছিল নিত্যদিনের। রেলপথ মন্ত্রণালয় এ রুটটি ১১০ বছর পর ২০০৮-০৯ অর্থবছরে শত কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার করে। বর্তমানে লালমনিরহাট-বুড়িমারী রুটে চার জোড়া ট্রেন চলাচল করছে। এখনো দুই জোড়া ট্রেন চালু করতে পারেনি লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় সদর দফতর। বুড়িমারী বাজারের ব্যবসায়ী মোতাহার হোসেন সুজন বলেন, বুড়িমারী রেলওয়ে স্টেশন থেকে বুড়িমারী জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার রেললাইন দখল হয়ে গেছে। এ পথের রেললাইনের স্লিপার ও পাথর তুলে নেওয়া হয়েছে। এসব দেখেও না দেখার ভান করে আছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। হাতীবান্ধা স্টেশন মাস্টার মাজেদুল ইসলাম বলেন, রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় অন্য ট্রেন ক্রসিং করার জন্য যে রেললাইন রয়েছে সেগুলোর কিছু কিছু জায়গায় পাথর নেই। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। পাটগ্রাম ও বুড়িমারী রেলওয়ে স্টেশনের দায়িত্বে নিয়োজিত স্টেশন মাস্টার নুর আলম বলেন, আমি যোগদানের আগেই দেখেছি রেললাইনের কিছু জায়গায় পাথর নেই। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে মৌখিকভাবে অবগত করেছি। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগীয় প্রকৌশলী আহসান হাবীব বলেন, বুড়িমারী রেলওয়ে স্টেশন থেকে বুড়িমারী জিরো পয়েন্টের দিকে বেদখল হয়ে যাওয়ার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ বিভিন্ন দফতরে চিঠি দিয়ে অবগত করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘বুড়িমারী-লালমনিরহাট রুটের রেললাইনের নিচ থেকে পাথর উধাও হওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজখবর নিয়ে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী (রাজশাহী) আসাদুল হক বলেন, লালমনিরহাট-বুড়িমারী রেলওয়ে রুটের ৯০ কিলোমিটার পথে যদি কোথাও পাথর না থাকে তাহলে অতিদ্রুত সেসব জায়গায় সংস্কার করা হবে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে।

সর্বশেষ খবর