মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

নুড়িপাথরে জীবন-জীবিকা

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি

নুড়িপাথরে জীবন-জীবিকা

নুড়িপাথরের খোঁজে কিশোরী -বাংলাদেশ প্রতিদিন

নালিতাবাড়ী উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী পানিহাটা তারানী এলাকায় ভোগাই নদীতে বালু খুঁড়ে নুড়ি পাথর তুলে জীবিকা নির্বাহ করেন একদল অভাবী মানুষ। এ অঞ্চলে বহু পাথর শ্রমিক জীবিকার তাগিদে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নদীর ঠান্ডা পানিতে নুড়ি পাথর খোঁজেন। প্রচন্ড শীতেও এ কাজ করতে বাধ্য হন তারা। সারা দিনের তোলা পাথর মহাজনের কাছে বিক্রি করে চলে সংসার। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে বয়ে চলা ভোগাই নদীতে এখানকার শ্রমজীবী মানুষের জীবিকার অন্যতম ভান্ডার। কেউ কেউ আশীর্বাদও মনে করেন ভোগাই নদীকে। প্রতিদিন শত শত সিএফটি নুড়ি পাথর তোলা হয় এ নদী থেকে। প্রতিদিন ভোর থেকে শ্রমিকরা দল বেঁধে নদীতে আসেন। সঙ্গে থাকে লোহার জাকলা, চালুনি ঝুড়ি ও কোদাল। দিনভর চলে পাথর তোলার কাজ। সারা দিনে একজন শ্রমিক গড়ে ২০-২৫ সিএফটি পাথর তুলতে পারেন। সন্ধ্যায় মহাজনের কাছে বিক্রি করে পান ২৫০-৩৫০ টাকা। এ নুড়ি পাথর স্থানীয় বাজারে সিমেন্টের খুঁটি তৈরি ও ঘরের মেঝে পাকা করতে ব্যবহার করা হয়। ভোগাইয়ের এ পাথরের সঙ্গে মিশে গেছেন নারীরাও। তারাও খুঁজে নিয়েছেন নতুন কর্মসংস্থান। ভোর হলেই গৃহের কাজকর্ম সেরে স্বামী-সন্তানকে খাইয়ে বের হয়ে যান কাজে। তারানী গ্রামের মর্জিনা বেগম বলেন, আমগর কোনো জমি নাই। সরকারি খাস জমিতে থাহি। স্বামী কামাল হোসেনরে নিয়া সারা দিন নুড়ি পাত্তর তুলি। এ দিয়ে আমগর সংসার চলে কোনো মতে। এর মধ্যে দুইডা সন্তান তাদেরও পড়া লেহার খরচ করুন লাগে। বড় ছেলেডা নবম শ্রেণি ও মেয়েডা ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ালেহা করে। তিনি বলেন, ‘ভাই এ ভোগাই নদীডাই আমাগরে বাঁচাই রাখছে।’ একই গ্রামের ইব্রাহিম খলিল নামের আরেক শ্রমিক জানান, ঘরে স্ত্রীসহ পাঁচ ছেলেমেয়ে। বড় মেয়ে ঢাকায় পোশাক শ্রমিকের কাজ করেন। সন্তানের পড়ালেখা ও ভরণপোষণ চলে এ পাথরের ওপর।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর