১৯৮২ সালে জেলায় কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে ২ একর ৮৮ শতাংশ জমির ওপর গড়ে ওঠে রাজবাড়ী সরকারি হাঁস-মুরগির খামার। তবে অব্যবস্থাপনা আর সংস্কারের অভাবে এ খামারের এখন বেহাল দশা। তিনটি শেডের মধ্যে দুটি নষ্ট হয়ে গেছে। বন্ধ রয়েছে হাঁস ও মুরগির বাচ্চা উৎপাদন। পাশর্^বর্তী জেলা থেকে মুরগির বাচ্চা এনে বিক্রি করে চলছে মুরগির খামারটি। স্থানীয়রা দুষছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উদাসীনতাকে।
জেলার পৌর এলাকায় মুরগির ফার্মটি অবস্থিত। ওই এলাকায় অস্থায়ী বাসস্ট্যান্ড, ফিলিংস্টেশন, বহুতল ভবন গড়ে উঠেছে। সরেজমিনে রাজবাড়ীর হাস-মুরগির খামারে গিয়ে দেখা যায়, মুরগির কিচিরমিচির শব্দ নেই। তিনটি শেডের মধ্যে দুটি শেড বন্ধ। ছাদ ভেঙে পড়েছে। ভিতরে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। একটি শেডে বেশ কিছু মুরগি রয়েছে। আগামী মাসে মুরগিগুলো বিক্রি করা হবে, জানালেন সেখানকার কর্মচারীরা। পানির পাম্প নষ্ট হয়ে গেছে। তত্ত্বাবধায়কের ব্যবহার করা গাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। কবে থেকে গাড়িটি নষ্ট হয়ে রয়েছে সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি দায়িত্বরত কেউ। ফার্মের ভিতরে বন-জঙ্গল হয়ে গেছে। ফলে মশার অভয়ারোণ্য হয়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠানটিতে।
জানা গেছে, এ খামারে বছরে ২০ হাজার মুরগির বাচ্চা উৎপাদন ও বিপণনের কথা। সেখানে অন্য জেলা থেকে ১২ হাজার ৪০৫টি মুরগির বাচ্চা বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক সময় হাঁস-মুরগির খামারটি কিচিরমিচির শব্দে মুখোরিত ছিল। এখন ভিতরের শেডগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। আগের থেকে মুরগি উৎপাদন কম হয়। চাহিদা মতো মুরগি পাওয়া যায় না ফার্মে।
স্থানীয় আবদুল কুদ্দুস বাবু বলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উদাসীনতায় ফার্মটি ধ্বংসের পথে। ফার্মটি প্রায় ৩ একর জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত। এই মুরগির ফার্মটি দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে অত্যাধুনিক ফার্ম হতে পারত। সেটি সরকার করতে পারেনি। অনেক মানুষ মুরগি ক্রয় করতে এসে ফিরে যায়।
মো. মোতালেব হোসেন নামে মুরগির ফার্ম এলাকার ব্যবসায়ী বলেন, দ্রুত ফার্মটির অবকাঠামো নতুন করে নির্মাণ করা দরকার। এগুলো সংস্কার করার মতো কোনো সুযোগ নাই। নতুন করে অর্থ বরাদ্দ দিয়ে ফার্মের শেড নির্মাণ করে মুরগির বাচ্চা উৎপাদন শুরু করতে হবে। এতে সরকার ও সাধারণ মানুষ লাভবান হবে।
রাজবাড়ী হাঁস-মুরগির খামারের ব্যবস্থাপক মো. মেহেদী হাসান (মুরগি প্রজনন ও খামার) বলেন, নতুন করে অর্থ বরাদ্দ দরকার। অনেক পুরাতন এই ফার্মটি, নষ্ট হয়ে গেছে। একটি মাত্র শেডে মুরগি রাখা যাচ্ছে। সেটিও সংস্কার করা প্রয়োজন। অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও জনবল সংকট দূর করা গেলে রাজবাড়ীর খামারটি দেশের মধ্যে একটি মডেল খামার করা সম্ভব।