লালমনিরহাটে ১৭টি কোল্ড স্টোরেজ রয়েছে। এসব হিমাগারে ধারণ ক্ষমতা রয়েছে ২ লাখ ৩৭ হাজার ৩৩৭ মেট্রিক টন। সংশ্লিষ্টদের মতে, এখনো বেশির ভাগ আলুই রয়েছে স্টোরেজে। রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম গাইবান্ধা ও নীলফামারীসহ এ অঞ্চলে গত বছরের তুলনায় ৩ হাজার ২৭৫ হেক্টর বেশি জমিতে আলু চাষ হয়েছে। এর পরও আলুর দাম কমছে না। এ নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ ক্রেতাদের। নিয়মিত বাজার মনিটরিং এবং কোল্ড স্টোরেজে তদারকি বাড়ানোর দাবি তুলেছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, কোল্ড স্টোরেজ কর্তৃপক্ষ সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় এর প্রভাব পড়ছে পাইকারি ও খুচরা বাজারে।
সরেজমিন ঘুরে লালমনিরহাট সেনা মৈত্রী বাজার, শিয়াল খোওয়া বাজার, তুষভাণ্ডার বাজার, গোসলা বাজার ও চাপারহাটে গিয়ে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। জানা গেছে, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম গাইবান্ধা ও নীলফামারীসহ এ অঞ্চলে এ অর্থ বছরে ১ লাখ ৬০২ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে ১৬ লাখ ১১ হাজার ৩৫৪ মেট্রিক টন। যা গত বছরের তুলনায় ৩ হাজার ২৭৫ হেক্টর জমিতে বেশি আলু চাষ হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, লালমনিরহাটে ১৭টি কোল্ড স্টোরেজ রয়েছে। এসব স্টোরেজে ধারণ ক্ষমতা রয়েছে ২ লাখ ৩৭ হাজার ৩৩৭ মেট্রিক টন। পাইকারি বিক্রেতারা জানান, এ সময়টাতে গৃহস্থ বা আলু উৎপাদনকারীদের ঘরে আলু থাকে না। যা আছে স্টোরে আছে। গত বছর ২৫০ টাকা বস্তা প্রতি ভাড়া থাকলেও কোনো কারণ ছাড়াই এ বছর নেওয়া হচ্ছে ৩৫০ টাকা। এই কারণে কোনোভাবেই বাজারে আলুর দাম কমছে না। মূলত বিদ্যুতের দাম বেশির অজুহাতে আলুর সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানো হচ্ছে। যা অযৌক্তিক বলছে পাইকারি আলু বিক্রেতারা। বলছেন, কোনো কারণেই এক বস্তা আলুর ভাড়া ৩৮০ টাকা হতে পারে না। লালমনিরহাট গোসলা বাজারের পাইকারি আলু বিক্রেতা সিকেন্দার আলী বলেন, পর্যাপ্ত পরিমাণ আলু রয়েছে স্টোরগুলোতে। তারা দাম ছাড়ছে না। স্টোরেই প্রতি কেজি আলুর দাম পড়ছে ৪৬ টাকা। সেই আলু রিকশায় আনা-নেওয়া খরচসহ ১ টাকা বেশি দরে বিক্রি করলেও ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু খুচরা পর্যায়ে ৫৫-৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, আপনারাই বলুন তো ৫০ কেজি আলুর বস্তা ভাড়া কেমন করে ৩৮০ টাকা হয়। লালমনিরহাট শহরের আলুর পাইকারি বাজারে ক্রেতা সাহানুর ইসলাম বলেন, আমাদের নিত্যদিন প্রয়োজন হয় আলু। কিন্তু এটার দাম কেন এত হবে। এই আলুই তো লালমনিরহাটে উৎপাদন হয়। আমরা চাই আলুর দাম কমুক। একই বাজারে কথা হয় মনিরুজ্জামানের সঙ্গে। তিনি বলেন, কোল্ড স্টোরেজের সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, এ বছর কৃষকের কাছ থেকেই বেশি দামে আলু বাজারে এসেছে। বিদ্যুতের দাম বেশি, পরিবহন মজুরিসহ অন্যান্য খরচ বেড়েছে।