‘বইপোকা গ্রন্থাগার’; সব শ্রেণির মানুষের জন্য উন্মুক্ত। পেনশনের প্রায় পুরো টাকায় ফ্ল্যাট কিনে নারায়ণগঞ্জে বিশাল এ লাইব্রেরি গড়ে তুলেছেন অমিতাভ চক্রবর্তী। শহরের এস এম মালেহ রোড এলাকার জয়নাল প্লাজার ১৪ তলায় এ লাইব্রেরি। যেখানে রয়েছে প্রায় আড়াইহাজার বই। অমিতাভ চক্রবর্তী এর নাম দিয়েছেন বইপোকা গ্রন্থাগার। যে কেউ ইচ্ছা করলেই এখানে এসে বই পড়তে পারেন। এখানে বই পড়তে আসা তপন রায় বলেন, ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জে এসেছি অমিতাভের লাইব্রেরি দেখার জন্য। আমি মনে করি উনার শ্রম স্বার্থক। উনাকে আমি গভীরভাবে শ্রদ্ধা করি। উনার কাছে অনেক বইয়ের সংগ্রহ আছে যা অনেকের কাছেই নেই। নারায়ণগঞ্জ জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারের লাইব্রেরিয়ান দেবাশীষ ভদ্র বলেন, আমি বিষয়টি জেনেছি। উনার এই লাইব্রেরি গড়ে তোলার বিষয়টি আমাদের বর্তমান সমাজের জন্য অনেক অনুপ্রেরণা জোগাবে। নিঃসন্দেহ এটা অনেক প্রশংসীয় কাজ।
অমিতাভ চক্রবর্তী বলেন, ছোট থেকেই পড়ার আগ্রহ ছিল। বাড়িতে পড়ার একটা আবহ ছিল। বাবা চিত্তরঞ্জন কটন মিলে চাকরি করতেন। সেখানে অফিসার্স ক্লাবের অধীনে লাইব্রেরি ছিল। বাড়ির সবাই বই পড়ত। তাদের দেখে আমারও বই পড়ার উৎসাহ হয়। সেই থেকে অনেক বইয়ের সংগ্রহও হয়। অগ্রণী ব্যাংকে চাকরি করতাম। বইয়ের যথাযথ সংরক্ষণ করার জন্যই পেনশনের টাকা দিয়ে লাইব্রেরিটি গড়ে তুলি। এখানে যে কেউ ইচ্ছা করলে এসে বই পড়তে পারেন।
তিনি বলেন, লাইব্রেরি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে পরিবারের সবার সহযোগিতা পেয়েছি। বাইরের অনেক মানুষ আমাকে পাগল বলে। তবে তাদের কথায় আমি কষ্ট পাই না।
পুরস্কারের আশায় আমি এটা গড়ে তুলিনি। মনের খোরাক টাকা-পয়সা দিয়ে মেটানো যায় না। বই পড়া এমন একটা নেশা, একবার যাকে ধরে এটা ছাড়া যায় না। এটা ইচ্ছা করলেও ছাড়া যায় না।